1. news@dainikchattogramerkhabor.com : Admin Admin : Admin Admin
  2. info@dainikchattogramerkhabor.com : admin :
শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৯:২৪ অপরাহ্ন
শিরোনামঃ
বেলখাইন স্পোটিং ক্লাবের অলনাইট ফুটবল টুর্নামেন্টের সেমিফাইনাল সম্পন্ন কুড়িগ্রামের রাজারহাট উপজেলা প্রাণিসম্পদ প্রদর্শনী ২০২৪ পালিত দীঘিনালায় বন্ধ হওয়া মসজিদ নির্মাণ কাজ পুনরায় চালু করতে মানববন্ধন সমাজসেবক মরহুম নুরুল আলম সওদাগরের ৭ম মৃত্যু বার্ষিকী “হযরত বায়েজিদ বোস্তামী (রহ:)” রচনায়ঃ মোহাম্মদ আব্দুল হাকিম (খাজা হাবীব ) “হযরত ওসমান (রাঃ)” রচনায়ঃ মোহাম্মদ আব্দুল হাকিম (খাজা হাবীব ) অর্থ প্রতিমন্ত্রী ওয়াসিকা খানের সাথে আসফ নেতৃবৃন্দের ঈদ শুভেচ্ছা বিনিময় “নববর্ষের চেতনা” রচনায়ঃ মোহাম্মদ আব্দুল হাকিম (খাজা হাবীব ) সিলেটে ঈদ উপহার দিলেন মনচন্দ্র সুশীলা, বিমান পটু ও রেনুপ্রভা প্রিয়রঞ্জন ফাউন্ডেশন বটতল ফাউন্ডেশন এর উপদেষ্টা ও কার্যকরী কমিটির পক্ষ থেকে ঈদের শুভেচ্ছা

স্বাধীনতা,বঙ্গবন্ধু ও বাংলাদেশ একসুত্রে গাথা – তসলিম উদ্দিন রানা

  • সময় শুক্রবার, ১৩ আগস্ট, ২০২১
  • ৩৩৩ পঠিত

বঙ্গবন্ধু একটি নাম নয় স্বাধীনতার অপর নাম।

স্বাধীনতা মানে বঙ্গবন্ধু মানে বাংলাদেশ আর বঙ্গবন্ধু স্বাধীনতা,বাংলাদেশ এক সুত্রে গাথা। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বাংলাদেশ নামক দেশটির স্বাধীন করতে অনেক ত্যাগ তিতীক্ষার আর কষ্টের ফসল।তিনি তার জীবনের মুল্যবান সময়,মেধা,সোনালী সময় ৪৬৮২ দিন জেলের মধ্যে,জুলুম নির্যাতনের শিকার করে এদেশটি প্রতিষ্ঠাতা করেন।তিনি হলন জাতির পিতা ও হাজারো বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালী।পৃথিবীর ইতিহাসে তার নাম স্বর্নাক্ষরে লিখে থাকবে।বাংলাদেশ নামক দেশটি যতদিন মানচিত্রে থাকবে ততদিন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান নামটি থাকবে।এদেশটির সাথে বঙ্গবন্ধু ওতপ্রোতভাবে জড়িত।তিনি বাংলাদেশের গোপালগঞ্জ ছোট্ট একটা গ্রাম কোটলীপাড়ায় সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন।
অজপাড়ার সেই ছেলেটা মাত্র ৫৫ বছরের জীবন,নিহত হওয়ার আগ পর্যন্ত শুধু বাঙালী জাতির নয় সারা বিশ্বের নির্যাতিত, নিপীড়িত,নিষ্পেষিত ও দুঃখী মানুষের জন্য যে পথ দেখিয়ে দিয়েছেন তা পৃথিবীতে বিরল।তার কর্মে,গুনে একজন সাধারণ কর্মী থেকে নেতৃত্বে সর্বোচ্চ পর্যায়ে যাওয়া ও একটি জাতির সৃষ্টি করার ইতিহাস বিরল ঘটনা।অল্প সময়ে ভঙ্গুর স্বাধীন বাঙালী জাতির দায়িত্ব কাধে নিয়ে কিভাবে সোনার বাংলায় রুপান্তর করা যায় তা নজিরবিহীন ছিল যা আমাদের বর্তমানের জন্য শিক্ষণীয়।

ছাত্র জীবন থেকে স্বাধীন চেতা ভাবনা নিয়ে বড় হয়েছে।দেখেছে ব্রিটিশ শাসনের প্রভাব আর বিভিন্ন নির্যাতনের চিত্র।তার পুর্বপুরুষের উপর ব্রিটিশের নির্যাতন।ব্রিটিশ বিরোধী আন্দোলনে অনেক বীর জীবনের আত্বাহুতি দিয়েছে অনেকে জাদরেল নেতারা লড়াই সংগ্রাম করে কোন সুফল পায়নি
তা তিনি স্বচক্ষে দেখে আস্তে আস্তে স্বাধীনতা আন্দোলন জন্য শহীদ সোহরাওয়ার্দীনের শিষ্যত্ব গ্রহণ করে ছাত্র আন্দোলন জড়িয়ে পড়েন।এক সময় কলকাতা প্রেসিডেন্সিয়াল কলেজ ছাত্র সংসদের জিএস নির্বাচিত হয়ে পুরোধমে কাজ শুরু করেন।অসম্ভব সাহসী,সীমাহিন ত্যাগ স্বাধীনচেতা,বিপ্লবী,প্রখর বুদ্ধিমান,দেশপ্রেমিক,দৃঢ় মনোবল,মানবপ্রেমী মানুষ ছিলেন বঙ্গবন্ধু।বাঙালী জাতির সোনালী অর্জনের নিপুণ কারিগর শেরে বাংলা একে ফজলুল হক, শহীদ
সোহরাওয়ার্দী,মাওলানা আব্দুল খান ভাসানীর
উত্তরসুরী হিসাবে বঙ্গবন্ধুর আবির্ভাব হলেও তিনি আস্তে আস্তে স্বাধীনতা আন্দোলনের মহানায়ক তথা জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান হিসাবে প্রতিষ্ঠাতা লাভ করেন নিজ দক্ষতায়, কর্ম ও গুণে।

পাকিস্তান সৃষ্টি হওয়ার পর পর তিনি যে বৈষম্য দেখতে পায় তার বিরুদ্ধে লড়াই সংগ্রাম করতে তিনি প্রস্তুতি নিয়ে ব্যস্ত হয়ে পড়েন।এমনকি ১৯৪৮ সালে ৪ ঠা জানুয়ারী বাংলাদেশ ছাত্রলীগের প্রতিষ্ঠা করেন।তার মাধ্যমে তিনি তার প্রতিবাদী আন্দোলন শুরু করেন।তিনি বুজেছিলেন ছাত্র আন্দোলন ছাড়া দেশের স্বাধীনতা সম্ভবপর নয়।সেজন্য মুল সংগঠনের আগে ছাত্র সংগঠন প্রতিষ্ঠা করেন।তার জ্ঞান,গরিমা এত প্রখর যা বিশ্লেষণ করা যাবেনা।তারপর ১৯৪৯ সালে ২৩ শে জুন বাংলাদেশ আওয়ামী মুসলীম লীগ প্রতিষ্ঠাতা করেন কয়েকজন জাতীয় নেতাদের নিয়ে তরুণ শেখ মুজিব।

ছাত্র রাজনীতির থেকে শুরু করে আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠাতা নেতা হিসাবে সমগ্র বাংলাদেশের আনাচে কানাচে ঘুরে বেড়ায়েছে খেয়ে না খেয়ে। সেই সময় তিনি গরীব অসহায় ও দুঃখী মানুষের কথা হৃদয়ে ধারণ ও অনুভব করেছেন।তাইতো বঙ্গবন্ধু বলেছিলেন – বিশ্ব আজ দুভাগে বিভক্ত শোষক আর শোষিত আমি শোষিতের পক্ষে। জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত তিনি এবাক্যটি ধারণ করে প্রতিটি সাধারণ মানুষের জন্য কাজ করেছেন।বাঙালীর মাটি ও মানুষের সাথে তার আত্বার সম্পর্ক ছিল বলে তিনি জেগে উঠে প্রতিবাদী হয়েছে,পাকিস্তানি জান্তার বন্দুকের নলকে তুচ্ছ করে ৩০ লক্ষ লোকের তাজা প্রাণ ও ৩ লক্ষ মাবোনের ইজ্জতের বিনিময়ে বীর বাঙালীর স্বাধীনতার জন্য জীবন দিয়েছে যা পৃথিবীর ইতিহাসে একটি বিরল ঘটনা।স্বাধীনতা নামক জিনিসটা মাত্র নয় মাসে বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে পেয়েছি।
পাকিস্তান সৃষ্টি হওয়ার পরে অর্থনৈতিক শোষণ ছাড়াও তারা আমাদের ভাষা ও সংস্কৃতির উপর আঘাত হানে।প্রেসিডেন্ট জিন্নাহ বলেন উর্দু হবে পাকিস্তানের রাষ্ট্র ভাষা। ততকালীন ছাত্র জনতা তার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানাই। পাকিস্তানি এসব অন্যায়ের বিরুদ্ধে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান প্রথম রুখে দাঁড়ান। বাঙালীদের উপর নেমে আসে অত্যাচার আর নির্যাতন। ৫২ এর ভাষা আন্দোলনের ধারাবাহিকতায়,৫৪ এর যুক্তফ্রন্ট নির্বাচন, ৬২ এর শিক্ষা আন্দোলন, ৬৬ এর ৬ দফা আন্দোলন,৬৯ এর গণ-অভ্যুত্থান ও ৭০ এর নির্বাচনে বিজয়ের পথে বাঙালীর মুক্তির সংগ্রাম এক যৌক্তিক পরিণতির দিকে ধাবিত হয়।
বাঙালীর মুক্তির সনদ ৬ দফা নিয়ে বঙ্গবন্ধু এগিয়ে যায়।তার অপরাধে পাকিস্তানি সরকার তাকে গ্রেফতার করেন।আগরতলা মামলা দিয়ে তাকে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে ও পরে ঢাকা ক্যান্টনমেন্ট বন্দী করে রাখে।ষড়যন্ত্র আগরতলা মামলার কার্যক্রম শুরু করে দেন কিন্তু বাঙালীদের দমিয়ে রাখতে পারিনি। তারা গণ-অভ্যুত্থানের মাধ্যমে বঙ্গবন্ধুকে মুক্ত করে আনেন।সামরিক জান্তা আইয়ুব খান সরকারের পতন হয়।আরেক সামরিক জান্তা ইয়াহিয়া খান ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত হয়।তিনি নির্বাচনের প্রতিশ্রুতি দেন।নির্বাচনে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ সংখ্যাগরিষ্ঠ আসনে জয়লাভ করেন। কিন্তু পাকিস্তানি শাসকগোষ্টি গণতান্ত্রিক উপায়ে ক্ষমতা হস্থান্তর করতে টালবাহানা শুরু করে।তারা বঙ্গবন্ধুর সংখ্যাগরিষ্ঠ দলকে ক্ষমতা না দিয়ে উল্টো বাঙালীদের উপর অত্যাচার নির্যাতন শুরু করে।ততসময়ে বঙ্গবন্ধু ১৯৭১ সালে ৭ মার্চ ঐতিহাসিক রেসকোর্স ময়দানে এক জনসভার ডাক দেন।সেদিনের জনসমুদ্রে তিনি ব্রজকন্ঠে ঘোষণা দেন” এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম,জয় বাংলা। এই ভাষণ ছিল স্বাধীনতার ঘোষণা। তার ভাষণের মাধ্যমে পাকিস্তানি শাসকগোষ্টির হত্যা,নির্যাতন, নিপিড়নের চিত্র ফুটে উঠে। স্বাধীন রাষ্ট্রের অভ্যুদয়ের কথা সেদিন বুঝা যায়।শত্রুর মোকাবিলায় তিনি বাঙালী জাতিকে নির্দেশ দেন- তোমাদের যা কিছু আছে তা দিয়ে শত্রুর মোকাবিলা করতে হবে।স্বাধীনতা সংগ্রামে এই ভাষণ জাতীকে ঐক্যবদ্ধ করে ও সংগঠিত করতে সাহায্যে করে।

বিশ্বের শ্রেষ্ঠ ভাষন হিসাবে প্রতিষ্ঠা লাভ করে।পাকিস্তানি শাসকের বিরুদ্ধে লড়াই সংগ্রাম করতে এই ভাষণের মাধ্যমে পরিচালিত হয়।জাতির পিতার এই ভাষণের মাধ্যমে বাঙালী জাতী এক হয়ে সশস্ত্র মুক্তিযুদ্ধে প্রস্তুতি নেন।
১৯৭১ সালে ২৫ মার্চ রাতে পাকিস্তানি বাহিনী নিরস্ত্র বাঙালীর উপর ঝাপিয়ে পড়ে ও হত্যাযজ্ঞ শুরু করে।বঙ্গবন্ধুর নির্দেশে ২৬ শে মার্চ বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষণা হয় ও যুদ্ধ চালিয়ে যাওয়ার নির্দেশ দেন। ঘোষণার পরপর বঙ্গবন্ধুকে ধানমন্ডির ৩২ থেকে গ্রেফতার করে পাকিস্তানে নিয়ে যাওয়া হয়।কারাগারে তাকে অমানবিক নির্যাতন করা হয়।সামরিক আদালতে তাকে ফাসির আদেশ দেওয়া হয়।
বাঙালী জাতী এক হয়ে যুদ্ধে ঝাপিয়ে পড়েন।জাতির পিতার আদর্শের উত্তরসুরী হিসাবে পাড়ায় পাড়ায় বিপ্লবের মাধ্যমে মুক্তিযুদ্ধে সর্বাত্মক অংশগ্রহণ করেন। বঙ্গবন্ধুর অনুপস্থিতিতে তার নির্দেশ মেনেই বাঙালী জাতি তাদের সর্বস্ব দিয়ে যুদ্ধে করে।মাত্র ৯ মাসে দেশ স্বাধীন হয় যা পৃথিবীর ইতিহাসে একটি বিরল ঘটনা।
১৯৭১ সালে ১০ এপ্রিল মেহেরপুরের বৈদন্যতলা আম্রকাননে বর্তমানে মুজিবনগরে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে রাষ্ট্রপতি,সৈয়দ নজরুল ইসলাম অস্থায়ী রাষ্ট্রপতি,তাজউদ্দীন আহমেদ প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হয়।প্রবাসী সরকারের পরিচালনায় মুক্তিযুদ্ধ শেষে ১৬ ডিসেম্বর ঐতিহাসিক রেসকোর্স ময়দানে পাকিস্তানি বাহিনীর আত্মসমর্পণের মধ্যে দিয়ে মুক্তিযুদ্ধে বিজয় অর্জিত হয়।তার আগে ৭ সেপ্টেম্বর পাকিস্তানের ফায়সালাবাদ জেলে বঙ্গবন্ধুর গোপন বিচার করে তাকে দেশদ্রোহী ঘোষণা করে ফাসি দেওয়া হয়।
বিশ্বের বিভিন্ন দেশ ও মুক্তিকামী মানুষ বঙ্গবন্ধুর জীবনের নিরপত্তা দাবী জানাই। ২৭ ডিসেম্বর বাংলাদেশের সরকারের পক্ষ থেকে বঙ্গবন্ধুর নিঃশর্ত মুক্তি প্রদানের জানান। ভারত ও রাশিয়া সহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থা বঙ্গবন্ধুর মুক্তি চেয়ে পাকিস্তানি সরকারের নিকট আহবান জানাই।অবশেষে ১৯৭২ সালের ৮ জানুয়ারি পাকিস্তানি সরকার বঙ্গবন্ধুকে মুক্তি দেন।১০ জানুয়ারি বাংলাদেশে আসলে বাঙালী জাতী তাকে রেসকোর্স ময়দানে বিরাট সংবর্ধনা দেন।১২ জানুয়ারি আনুষ্ঠানিক ভাবে তিনি বাংলাদেশের সরকারের দায়িত্ব গ্রহণ করেন।

বঙ্গবন্ধু সরকারের দায়িত্ব নিয়ে প্রশাসনিক ব্যবস্থার পুর্নগঠন,সংবিধান প্রণয়ন,১ কোটি মানুষের পুর্ণবাসন,যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়ন, শিক্ষাব্যবস্থার সম্প্রসারণ, শিক্ষার্থীদের জন্য প্রাথমিক স্কুল পর্যন্ত বিনামুল্যে ও মাধ্যমিক শ্রেণী পর্যন্ত নামমাত্র পাঠ্যপুস্তকসরবরাহ,মদ,জুয়া,ঘোড়াদৌড়সহ সমস্থ ইসলামবিরোধী কর্মকাণ্ড নিষিদ্ধ, ইসলামীক ফাউন্ডেশনপ্রতিষ্ঠা,
মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ড পুর্নগঠন,১১০০০ প্রাথমিক স্কুল প্রতিষ্ঠাসহ ৪০০০০ প্রাথমিক স্কুল সরকারিকরণ,
মুক্তিযুদ্ধে পাক বাহিনীর হাতে ধর্ষিতা মেয়েদের পুর্ণবাসনের মাধ্যমে নারী পুর্ণবাসন সংস্থা,
মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য মুক্তিযোদ্ধা কল্যাণ ট্রাষ্ট গঠন, ২৫ বিঘার খাজনা মাফ,বিনামূল্যে কৃষকদের কৃষি উপকরণ বিতরণ,পাকিস্তানিদের পরিত্যক্ত ব্যাংক,বীমা ও ৫৮০ টি শিল্প ইউনিটের জাতীয়করণ ও চালু করার মাধ্যমে হাজার হাজার শ্রমিক কর্মচারীদের কর্মসংস্থান,
ঘোড়াশাল সার কারখানা, আশুগঞ্জ কমপ্লেক্সের প্রাথমিক কাজ ও অন্যান্য শিল্প প্রতিষ্ঠান স্থাপন, বন্ধ শিল্প কারখানা চালুকরণ সহ অন্যান্য সমস্যার সমাধানে একটি সুষ্ঠু পরিকল্পনার মাধ্যমে অর্থনৈতিক অবকাঠামো তৈরি করে দেশকে একটি সুখী সমৃদ্ধিশালী রাষ্ট্রে পরিণত করার প্রয়াস নিয়ে সোনার বাংলা গঠনে কাজ যান।অতি অল্প সময়ে বাঙালী জাতির উন্নয়নে বঙ্গবন্ধুর অবদান অনস্বীকার্য।অল্প সময়ে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক রাষ্ট্রের স্বীকৃতি লাভ করা ছিল বঙ্গবন্ধুর সরকারের বিরাট সাফল্য।
বঙ্গবন্ধু,বাংলাদেশ ও স্বাধীনতা এক সুত্রে গাথা।নির্যাতিত, নিপীড়িত ও অধিকার বঞ্চিত মানুষের দাবী আদায়ের জন্য লড়াই সংগ্রাম করে একটি স্বাধীন দেশ উপহার দেন।তিমি বলেছিলেন – আমি আমার দেশের মানুষকে বেশী ভালবাসি।তাদের জন্য আমি নিজের জীবন দিতে প্রস্তুত। এই স্বাধীনতা একমাত্র তাদের মুখে হাসি ফুটানোর জন্য।স্বাধীন দেশের ভঙ্গুর অর্থনীতি থেকে পরিত্রাণ পাওয়ার জন্য তিনি দেশ গঠনের দিকে মনোনিবেশ করেন।আজীবন সাধারণ মানুষের ভাগ্যের উন্নয়নের জন্য সংগ্রাম করেছেন।তিনি পুরো জাতিকে একত্রিত করে স্বাধীনতা যুদ্ধে লিপ্ত করে স্বাধীনতা নামক সোনার হরিণটি বাস্তবায়ন করেন।জাতির পিতার কল্যাণে আমরা আজ স্বাধীন জাতি। তিনি হলেন বাঙালী জাতির মুক্তির দিশারি, অবিসংবাদিত নেতা তথা জাতির পিতা। শুধু বাঙালী নয় সারা বিশ্বের নির্যাতিত ও নিপীড়িত মানুষের শ্রেষ্ঠ মহান নেতা ছিলেন।
বঙ্গবন্ধু স্বপ্ন দেখতেন,আবার তা বাস্তবায়ন করতেন, বাংলাদেশের স্বাধীনতা তিনি প্রতিষ্ঠাতা ছিলেন।তিনি ক্ষুধা ও দ্রারিদ্রমুক্ত সোনার বাংলা প্রতিষ্ঠা করতে কিছু কাজ করেছিলেন। তিনি বুঝতে পেরে ছিলেন সোনার বাংলা প্রতিষ্ঠা করতে সোনার মানুষ চাই। সেজন্য তিনি প্রতিটি সেক্টরে নিজের মত সাজাতে হাত দেন। সুনির্দিষ্ট কিছু কাজ হাতে নিয়ে অগ্রসর হতে চাইলে তিনি দেখতে পান দুর্নীতি হল তার বাধা।দেশের উন্নয়ন করতে হলে দক্ষ জনশক্তি ও পরিকল্পনা প্রয়োজনতা রয়েছে। সেজন্য দুর্নীতিকে টার্গেট করেন।সেই সময় তিনি দুর্নীতির বিরুদ্ধে কঠোর ভুমিকা রাখেন। দুর্নীতির বিরুদ্ধে তিনি বলেন – একটা কথা মনে রাখতে হবে, আঙুল দিয়ে দেখাতে হবে।ওই চোর,ব্লাক মার্কেটিয়ান,ওই ঘুষখোর।
আরেক জায়গায় তিনি বলেন -ভয় নাই,কেনো ভয় নাই। আমি আছি।দুর্নীতিবাজদের খতম করো,বাংলাদেশের দুঃখী মানুষের দুঃখ মোচন করো।
বঙ্গবন্ধু ছিলেন তীক্ষ্ণ বুদ্ধিসম্পন্ন নেতা।অসহায় ও দুঃখী মানুষের ভাগ্যে উন্নয়নের জন্য তিনি আপোষহীন ভাবে লড়াই সংগ্রাম করে যান।তিনি জানতেন বাংলাদেশকে সোনার বাংলা প্রতিষ্ঠা করতে গেলে শিক্ষা, সাংস্কৃতিক, অর্থনীতি,
সমাজনীতি,

ও উদ্ভাবনের বিকল্প নাই।তার লেখা – আমরা দেখা নয়া চীন বইয়ের মধ্যে রাজনীতি, অর্থনীতি, বৈষম্য, সামাজিক নানা অনুসঙ্গ,আন্তর্জাতিক সম্পর্ক, মানবিক যোগাযোগ, বিশ্ব বাস্তবতা, শান্তিবাদ এবং নয়া চীনের রহস্য উদঘাটন করার পাশাপাশি বাংলাদেশের অবস্থা ও তুলনা করেছেন।
তিনি লিখেছিলেন -চীন সংস্কার উন্নতি করেছে মাথাভারী ব্যবস্থার ভিতর দিয়া নয়,সাধারণ কর্মীদের দিয়া,শ্রমিকদের জন্য আলাদা হাসপাতাল আছে,অসুস্থতার সময় বেতনসহ ছুটি দেওয়া হয়।বছরে তারা এক বার ছুটি পায়,যারা বাড়িতে যেতে চাই তাদের বাড়িতে যেতে দেওয়া হয়,আর যারা স্বাস্থ্য নিবাসে যেতে চায় তাদেরও ব্যবস্থা করা হয়।বঙ্গবন্ধু আরও লিখেছেন আমাদের দেশে যখন পাট চাষির ঘরে থাকে, তখন দাম অল্প হয়।যখন মহাজনদের ঘরে থাকে দাম বাড়তে থাকে। চাষি ও উৎপাদন খরচও পায় না।- কিন্তু নয়াচীন একটা সামঞ্জস্যপূর্ণ বিধান করেছে,কৃষক বিক্রি করে তার দাম দিয়ে ভালোভাবে অল্প দামে তেল,নুন ও কাপড় কিনতে পারে।
বাংলাদেশকে সত্যিকারের প্রকৃত সোনার বাংলা প্রতিষ্ঠা করা ছিল বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন। কিন্তু তার স্বপ্ন শেষ করে দেয় কিছু স্বার্থন্বেষী লোক।তারা দেশী-বিদেশী এজেন্ডা বাস্তবায়নের ঘৃণ্য পথে গিয়ে বাঙালী জাতির হাজারো বছরের শ্রেষ্ঠ সন্তান,শেষ ঠিকানা, স্বাধীনতার মহানায়ক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে ১৯৭৫ সালে ১৫ আগষ্ট রাতের অন্ধকারে হত্যা করে। এমনকি তার সহধর্মিণী শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব,ছেলে শেখ কামাল, শেখ জামাল, অবুঝ শিশু ছোট্ট রাসেলকে সহ পুরো পরিবারের সবাইকে হত্যা করে যা ইতিহাসের বর্বরোচিত হত্যাযজ্ঞ।পৃথিবীর কোথাও এমন নিষ্ঠুরতম হত্যাকাণ্ড ঘটেনি।বঙ্গবন্ধুর হত্যা মানে বাঙালী জাতির স্বপ্নকে হত্যা করে।পুরো জাতির উন্নয়নের অগ্রযাত্রাকে ব্যাহত করে।বাংলাদেশের সবকিছু শেষ করে দেয় যা বলাবাহুল্য। সেদিন পুরো জাতি স্তব্ধ হয়ে যায়।আকাশ বাতাস নিশঃস্বব্দ ছিল।সোনার বাংলা স্বপ্ন স্বপ্নই রয়ে গেল।জাতি হারাল বিশ্বের নেতার নেতা,উন্নয়নের রোল মডেল,দুর্নীতি বিরোধী বলিষ্ঠ নেতৃত্ব,পথ প্রদর্শক,সমাজ সংস্কারক,দেশপ্রেমিক,গরীব দুঃখী মানুষের বন্ধু,আত্ত্বার আত্ত্বীয়,পরোপকারী,বাঙালীর মুক্তির মহানায়ক,
হাজারো বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালী, দার্শনিক,তাত্ত্বিক মহাপুরুষ।

লেখক – তসলিম উদ্দিন রানা
সাবেক ছাত্রনেতা ও
সদস্য,অর্থ ও পরিকল্পনা উপ-কমিটি,
বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ।

খবরটি শেয়ার করুন..

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর..
কপিরাইট © ২০২০ সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
ওয়েবসাইট ডিজাইন: ইয়োলো হোস্ট