1. news@dainikchattogramerkhabor.com : Admin Admin : Admin Admin
  2. info@dainikchattogramerkhabor.com : admin :
বৃহস্পতিবার, ০১ মে ২০২৫, ০২:৪১ অপরাহ্ন
শিরোনামঃ
এপেক্স ক্লাব অব পটিয়ার ১০০ তম ডিনার মিটিং ও সেলাই মেশিন বিতরণ অনুষ্ঠিত। শ্রমিকের ঘাম শুকানোর আগে মজুরি পরিশোধ করুন -লায়ন মোঃ আবু ছালেহ্ বাকলিয়ায় ওয়ার্ড অফিসের দুর্নীতির অনুসন্ধান করতে গিয়ে সাংবাদিক আহত! নাইক্ষ্যংছড়ি’র বাইশারী শাহ নুরুদ্দীন দাখিল মাদ্রাসা’র এডহক কমিটির পরিচিতি সভা পুলিশ সুপার (এসপি) পদমর্যাদার ১৪ জন কর্মকর্তাকে বদলি করেছে সরকার। আজ ০১লা মে আন্তজার্তিক শ্রমিক দিবস মাওলামা রইস উদ্দিন হত্যার প্রতিবাদে পটিয়ায় প্রতীকী লাশ ও বিক্ষোভ মিছিল চট্টগ্রামে তিনদিনের সুন্নাতে ভরা ইজতেমা শুরু, প্রথমদিনেই মুসল্লির ঢল। পেকুয়ায় কুকুরের কামড়ে নারী ও শিশুসহ আহত-২০ চোরাচালান রুখতে মরিয়া বিজিবি: নাইক্ষ্যংছড়ি সীমান্তে ট্রাকভর্তি পণ্য ও ২০ বার্মিজ গরু জব্দ

শ্রমিকের ঘাম শুকানোর আগে মজুরি পরিশোধ করুন -লায়ন মোঃ আবু ছালেহ্

  • সময় বৃহস্পতিবার, ১ মে, ২০২৫
  • ৫ পঠিত

 

মে দিবসে সবচেয়ে যে বিষয়টি আলোচনার সামনে চলে আসে তা হলো শ্রমঘণ্টা, শ্রমিকের অধিকারের মধ্যে কর্মপরিবেশ ও ন্যায্য মজুরি ইত্যাদি। শ্রমগ্রহীতার কাঁধে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব হলো- শ্রমিকের ন্যায্য মজুরি দেওয়া। রাসূল (সা.) বলেছেন, ‘তোমরা শ্রমিকের মজুরি পরিশোধ করো তার ঘাম শুকানোর আগেই’ (বায়হাকি, মিশকাত)। যারা শ্রমিকের মজুরি আদায়ে টালবাহানা করে তাদের সাবধান করে বলেছেন, ‘সামর্থ্যবান পাওনা পরিশোধে গড়িমসি করা জুলুম বা অবিচার’ (বুখারি)। কোরআন-হাদীস, আমাদের সংবিধান এবং বিদ্যমান আইনে শ্রমিকের অধিকারের বিষয়ে কি বলা হয়েছে তা হচ্ছে আজকের আলোচনার মূল প্রতিপাদ্য।
আজ পহেলা মে। সারা বিশ্ব এই দিনটি ‘আন্তর্জাতিক শ্রমিক দিবস’ হিসেবে পালন করে থাকে। ১৮৮৬ সালে যুক্তরাষ্ট্রের শিকাগো শহরে ন্যায্য মজুরি আর দৈনিক ৮ ঘণ্টা কাজের দাবির আন্দোলনে এবং রক্তের বিনিময়ে শ্রমিকরা কিছু অধিকার আদায় করতে সক্ষম হয়েছিল যার ফলে ১৮৮৯ সালের ১৪ জুলাই ১ মে শ্রমিক দিবস হিসেবে ঘোষণা করা হয়। পরের বছর ১৮৯০ সাল থেকে বিশ্বব্যাপী ‘মে দিবস’ বা ‘আন্তর্জাতিক শ্রমিক দিবস’ হিসেবে পালন করা হয়।
‘বাংলাদেশ শ্রম আইন ২০০৬’ বিদ্যমান ও বলবৎ আছে। এই আইনটি শ্রমিক নিয়োগ, মালিক ও শ্রমিকের মধ্যে সম্পর্ক, সর্বনিম্ন মজুরির হার নির্ধারণ, মজুরি পরিশোধ, কার্যকালে দুর্ঘটনাজনিত কারণে শ্রমিকের জখমের জন্যে ক্ষতিপূরণ, ট্রেড ইউনিয়ন গঠন, শিল্প বিরোধ উত্থাপন ও নিষ্পত্তি, শ্রমিকের স্বাস্থ্য, নিরাপত্তা, কল্যাণ ও চাকরির অবস্থা ও পরিবেশ এবং শিক্ষাধীনতা ও সংশ্লিষ্ট বিষয়াদি সম্পর্কে সকল আইনের সংশোধন ও সংহতকরণকল্পে প্রণীত হয়। শ্রমিক স্বার্থ রক্ষার্থে কার্যকরী একটি আইন তা নিঃসন্দেহে বলা যায়। তবে এই আইন মেনে কতটুকু শ্রমের মর্যাদা এবং শ্রমিক অধিকার ও নিরাপত্তা নিশ্চিত হচ্ছে সেটি বড় প্রশ্ন। আইন প্রণয়ন করে তা বাস্তবে কতটুকু প্রতিপালন হচ্ছে সেটি দেখার একটি বিষয় বারবার মনে উঁকি দেয়। তবে ২০১৩ সালে সরকার শ্রম আইন সংশোধনের উদ্যোগ নিয়েছিল। উক্ত সংশোধিত আইনের প্রস্তাবনায় শিশুশ্রমকে নিষিদ্ধ করা হয়েছিল। জরিমানার ব্যবস্থাও আছে। ১৪ বছরের নিচে যেকোনো বয়সী শিশুকে কাজে নিয়োগ দিতে নিষেধ করা হয়েছে। এসবই প্রশংসনীয় ও ভালো উদ্যোগ, তবে প্রস্তাবিত সংশোধনীর বেশ কিছু বিষয়ে আরও কাজ ও সুপারিশ করার সুযোগ আছে।
শ্রমিকের সংজ্ঞা নির্ধারণ, ক্ষতিপূরণ, শ্রমবিষয়ক মামলা-মোকদ্দমার বিচারপ্রক্রিয়ায় ADR-কে (Alternative Dispute Resolution) অন্তর্ভুক্ত করা ও যৌন হয়রানি নিরসনের জন্য মহামান্য হাইকোর্টের রায় অনুযায়ী শ্রম আইনে সংযুক্ত করা। শ্রমিকের সংজ্ঞা অনুসারে তদারকি কর্মকর্তাকে শ্রমিক হিসেবে গণ্য করা হচ্ছে না। ২০১৩ সালে শ্রম আইন সংশোধনের আগে তদারকি কর্মকর্তাকে শ্রমিক হিসেবে গণ্য করা হতো। তদারকি কর্মকর্তার কাজের প্রকৃতি অনুযায়ী তিনিও একজন শ্রমিক। মৃত বা স্থায়ীভাবে ক্ষতিগ্রস্ত শ্রমিকের পরিবার থেকে একজন সদস্যকে যোগ্যতা অনুযায়ী কাজের সুযোগ দেওয়া। ক্ষতিপূরণ সম্পূর্ণভাবে না দেওয়া পর্যন্ত সর্বশেষ মজুরি প্রদান করতে হবে। কিন্তু ইদানীং বেশ কিছু মামলায় দুর্ঘটনার শিকার ব্যক্তির আয়, দুর্ভোগ ও অন্যান্য বিষয় বিবেচনায় রেখে মামলার ক্ষতিপূরণ নির্ধারণ করা হচ্ছে।
বর্তমানে বাংলাদেশ স্বল্পোন্নত দেশের তালিকা থেকে বের হয়ে নিম্ন মধ্যবিত্ত দেশে চলে এসেছে। এ জন্য আমাদের একটা প্রস্তুতি থাকা আবশ্যক। কারণ, মধ্যম আয়ের দেশে পরিণত হলে আন্তর্জাতিকভাবে বাংলাদেশের অর্থনীতিসহ সামগ্রিক ব্যবস্থাপনার ওপর নজর রাখা হবে। দেশের আইনকানুন কী পর্যায়ে রয়েছে, কেমন মানছি ইত্যাদি বিষয় বিবেচনা করা হবে। সমস্যা হলো, শ্রম আইন বলতে আমরা কেবল পোশাকশিল্পের সঙ্গে সম্পৃক্ত বিধিনিষেধগুলো চিন্তা করি। এ মানসিকতা থেকে খুব শিগগিরই বের হয়ে আসতে হবে। পোশাকশিল্পের বাইরেও শ্রমের অন্যান্য যে বড় খাত রয়েছে সেগুলো বিবেচনায় রেখে আগাতে হবে।
শিল্প শ্রমিকদের ক্ষেত্রে ১৪ থেকে ১৮ বছর বয়স হলে তবে হালকা কাজ করতে পারবে। কিন্তু বাস্তবে দেখা যায়, তাদের দিয়ে একজন পরিণত শ্রমিকের কাজ করানো হচ্ছে যা অমানবিক। কর্মক্ষেত্রকে পরিবেশবান্ধব ও নারীবান্ধব শুধু কথা নয় বাস্তবে এর প্রয়োগ প্রত্যাশিত। যৌন নির্যাতন বা হয়রানি প্রতিরোধে মহামান্য হাইকোর্টের নির্দেশনা পরিষ্কার ও ব্যবহারোপযোগী যা কাজে লাগাতে হবে।। লিঙ্গবৈষম্যভিত্তিক সহিংসতা নিরসনে সচেতনতা বৃদ্ধি এবং শ্রমিকদের অধিকার আদায়ে এনজিওগুলো গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে বিধায় তাদেরকেও সুযোগ করে দিতে হবে। এ ক্ষেত্রে মহামান্য হাইকোর্টের রায় একটি বড় সহায়। এটা উন্নয়নকে গতিশীল করবে এবং মালিক ও শ্রমিক সব পক্ষকে জিতিয়ে দিবে। শ্রমজীবী মায়েরা সন্তানকে ডে-কেয়ার সেন্টারে রাখতে পারলে কাজে বেশি মনোযোগ দিবেন।
২০০৬ সালের আইন সংশোধন আজও হয়নি। ২০১৩ সালে প্রস্তাবিত সংশোধনী আনা হলেও এখনো তা চূড়ান্ত হয়নি। যে আইনই হোক তা সর্বজনীন করা প্রয়োজন। যে আইন মাত্র ১০-১২ শতাংশ মানুষকে আইনি সুরক্ষা দেয় সেটি সর্বজনীন আইন হতে পারে না। তখন প্রশ্ন থাকে আইনটি কার জন্য করা হলো।

খবরটি শেয়ার করুন..

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর..
কপিরাইট © ২০২০ সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
ওয়েবসাইট ডিজাইন: ইয়োলো হোস্ট