চট্টগ্রামের পটিয়া উপজেলার কোলাগাঁও ইউনিয়নের নলান্দা গ্রামের বীরমুক্তিযোদ্ধা রফিক আহমেদ নিজের জীবন বাজি রেখে দেশের জন্য যুদ্ধ করেন।এই অকুতোভয় বীর সেনার মুক্তিযোদ্ধা স্বীকৃতি চান কামনা করছেন পটিয়া উপজেলার সর্বস্তরের জনগণ। মুক্তিযুদ্ধের রণাঙ্গনে ১ম সারির বীর মুক্তিযোদ্ধা ও শিক্ষাবিদ রফিক আহমদ প্রচার বিমুখ।দীর্ঘ সময় প্রবাসে থাকার কারণে বিভিন্ন ধরনের তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হতে পারেননি তিনি।
৬৯ সালে স্যার আশুতোষ সরকারি কলেজে ১১ দফা আন্দোলনের অগ্রসৈনিক ও মুক্তিযুদ্ধে অবিস্মরণীয় অবদান থাকা সত্বেও স্বীকৃতি মেলেনি আজও। চলতি ২০২১ সালের ১৯ জানুয়ারি অনলাইনে গেজেট ভুক্তির জন্য আবেদন করেছেন। যার নাম্বার ৭০৮১৬৪০০৫২০৩২৫। সেই সাথে পটিয়ার সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে অবহিত করেন।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার মহোদয় বরাবরে ২৪/৪/২২ একটি ম্যানুয়েল আবেদন দাখিল করা হয়।
এই বীর মুক্তিযোদ্ধা জানান, ১৯৭১ সালে বোয়ালখালীর স্যার আশুতোষ কলেজের গণিত বিভাগের অধ্যাপক দিলীপ কুমার চৌধুরীর সাথে মুক্তিযুদ্ধে অংশ গ্রহন করন। চট্টগ্রামের বিভিন্ন অপারেশনে অংশ গ্রহন করেন। তিনি বলেন, এপ্রিলে দিলীপ কুমার চৌধুরী সহ ভারতে যাওয়ার জন্য বান্দরবান থেকে পাহাড়ি পথে চট্টগ্রাম-কাপ্তাই সড়কের পদুয়া হয়ে দোভাষী বাজারে উপস্থিত হলে স্যারের গাড়ি ছিল সবার আগে। জিপ রওয়ানা হয় ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজের উদ্দেশে। ইমাম গাজ্জালি কলেজ পার হবার পর আমরা গুলির আওয়াজ শুনতে পান। জানতে পারেন স্যারের উপর হামলা হয়েছে। এ হামলায় স্যারসহ অনেকে শহীদ হন। উনার গাড়ি দুরে থাকার কারণে বেচে যান। মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণের কারণে হানাদার বাহিনী আমার বাড়িতে তল্লাশি চালিয়ে আমার মা-বাবার উপর অনেক নির্যাতন করে।
রফিক আহমেদ পটিয়া ক্লাবের প্রতিষ্ঠাতা সদস্য স্বাধীনতা যুদ্ধের প্রথম কাতারের সৈনিক মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক। বয়সের ভারে এখন অনেকটাই দুর্বল হয়ে পড়েছেন এই বীর মুক্তিযোদ্ধা রফিক আহমেদ । পটিয়ার বীর মুক্তিযোদ্ধা যুদ্ধকালীন কমান্ডার মহসিন খান, সাবেক উপ পুলিশ কমিশনার বীর মুক্তিযোদ্ধা কবি জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী, বীর মুক্তিযোদ্ধা আহমদ নবী, তপন দস্তিদার,এ এফ এম তোজাম্মেল হোসেন মনসার এলাকার নূরুল ইসলাম ও তাঁর সহযোদ্ধা আমুচিয়া ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান আহমদ হোসেন বাবু মুক্তিমান বড়ুয়া সহ অনেকেই অবগত আছেন বলে জানান।
মৃত্যুর আগে আদৌও স্বীকৃতি মিলবে কিনা এটাই এখন তার প্রশ্ন? মুক্তিযোদ্ধা রফিক আহমদ ১৯৪৭ সালের ৭ আগষ্ট চট্টগ্রামের পটিয়ায় উপজেলার কোলাগাঁও ইউনিয়নের নলান্ধা গ্রামে জন্ম গ্রহণ করেন। পিতা মৃত এজাহার মিয়া ও মাতা মৃত জয়নাব খাতুন। তিনি ১৯৬৫ সালে চরকানাই বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয় থেকে মেট্টিক পাশ করেন । ১৯৬৭ সালে চট্টগ্রাম কমার্স কলেজ থেকে এইচএসসি, ১৯৬৯ সালে বোয়ালখালী কানুনগোপাড়া স্যার আশুতোষ কলেজ থেকে বি.কম, স্বাধীনতা উত্তর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে মাস্টার্স ডিগ্রীতে অধ্যয়ন করেন।
মুক্তিযোদ্ধা রফিক আহমদ স্হানীয় প্রশিক্খন ছাড়া ও ভারতের মিজুরামস্হ দেমাগ্রী ক্যাম্পে এ,এফ এম তোজাম্মেল হোসেনের গ্রুপে যোগ দিয়েছিলেন।
দেশের মুক্তির জন্য ঝাঁপিয়ে পড়ে চট্টগ্রামের বিশেষ ক্যাম্পে শারীরিক নির্যাতনের স্বীকার হন। এই প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধার স্বীকৃতি প্রদানে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করছি।
Leave a Reply