মোঃ মনিরুল ইসলাম রিয়াদ
স্টাফ রিপোর্টারঃ
ব্রাইট বাংলাদেশ ফোরামের উদ্যোগে এবং একশনএইড বাংলাদেশের সহযোগিতায় আজ মঙ্গলবার চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের আব্দুল খালেক মিলনায়তনে “দূর্যোগ মোকাবেলায় সঠিক ব্যবস্থাপনা এবং জলবায়ু বান্ধব বাজেট” প্রণয়নের লক্ষ্যে একটি গুরুত্বপূর্ণ এডভোকেসি সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
সভায় চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের সরকারি কর্মকর্তা, ম্যাজিস্ট্রেট, ওয়ার্ড পর্যায়ের জনপ্রতিনিধি, যুব প্রতিনিধি ও মিডিয়া ব্যক্তিবর্গের অংশগ্রহণ ছিল চোখে পড়ার মতো।
অনুষ্ঠানে অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জেলা প্রশাসনের সহকারী কমিশনার (সাধারণ শাখা) ও এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট সাইফুল ইসলাম ভূঞা, চন্দনপুরা ফায়ার সার্ভিস স্টেশনর সিনিয়র স্টেশন অফিসার মোকারম হোসেন চৌধুরী,চসিক এর শিক্ষা কর্মকর্তা রাশেদা আক্তার, অঞ্চল-১ এর আঞ্চলিক কর্মকর্তা উম্মে কুলসুম, জনস্বাস্থ্য ও প্রকৌশল অধিদপ্তরের স্টেনোগ্রাফার জামিলুর রহমান এবং ত্রাণ ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তার প্রতিনিধি হাসিবুর রহমান।এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন শাহরিয়ার নাসরীন চৌধুরী আলিসা ,একশন এইড বাংলাদেশের সিনিয়র অফিসার – MEAL, চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের ১৯ নং ওয়ার্ডের সচিব সমর দে, ৩৫ নং ওয়ার্ডের সচিব বাসু তালুকদার, ১৩ নং ওয়ার্ডের সচিব সৌমেন দে ও ৮ নম্বর ওয়ার্ডের ওয়ার্ড সচিব তছলিম উদ্দিন, যুব সংগঠন এবং বিভিন্ন গণমাধ্যমের প্রতিনিধি।
অনুষ্ঠানের শুরুতে জাতীয় সংগীত ও ১৯৭১ এর মুক্তিযুদ্ধ ও ২০২৪ এর জুলাই এর শহীদদের প্রতি সম্মান জানিয়ে ১ মিনিট নীরবতা পালন করা হয় ।পরবর্তীতে চট্টগ্রাম অ্যাক্টিভিস্টা- থিয়েটার টিমের ২০ জন সদস্য “আবহাওয়ার অভিমান” নামে একটি নাটক পরিবেশন করেন যেখানে জলবায়ু পরিবর্তনের ভয়াবহতা, দুর্যোগের প্রভাব এবং করণীয় বিষয়ে আলোকপাত করা হয়। এরপর “ঊষার আলো যুব সংঘ”-এর সভাপতি জাবির বিন সোলায়মান একটি পাওয়ার পয়েন্ট প্রেজেন্টেশন উপস্থাপন করেন, যেখানে যুবকদের পক্ষ থেকে জলবায়ু ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনায় কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের দাবিগুলো তুলে ধরা হয়।
প্রারম্ভিক বক্তব্যে লোকাল রাইটস প্রোগামের ম্যানেজার রিদুয়ানুল হাকিম রিয়াদ বলেন, “দূর্যোগ মোকাবেলায় যুবরাই সবচেয়ে বেশি ভূমিকা রাখতে পারে। তাই ওয়ার্ড পর্যায়ে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটি পুনর্গঠন করতে হবে এবং চলতি বছরের চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন বাজেটে জলবায়ু বিষয়ক এবং সবুজায়নের জন্যে নির্দিষ্ট বরাদ্দ রাখতে হবে।”
পরে একশনইড বাংলাদেশ এর ইন্সপিরেটর নিধি চাকমার তত্ত্বাবধানে একটি প্যানেল আলোচনার আয়োজন করা হয়, যেখানে উপস্থিত অতিথিবৃন্দ অংশ নেন। আলোচনায় উঠে আসে নানা গুরুত্বপূর্ণ বিষয়।
সিটি কর্পোরেশনের প্রতিনিধিরা জানান, আগত বাজেটে জলবায়ু বান্ধব পরিকল্পনা অন্তর্ভুক্ত করা হবে এবং যুবদের সিটি কর্পোরেশনের দুর্যোগ ব্যবস্থাপনার ওয়ার্ড ভিত্তিক কমিটিতে যুক্ত করা হবে যুব স্ট্যান্ডিং কমিটি যা সিটি কর্পোরেশনের সাথে সরাসরি কাজ করবে এবং বিভিন্ন সুযোগ সুবিধা সিটি কর্পোরেশন কর্তৃক দেওয়া হলে তা কমিউনিটি পর্যায়ে তারা নিয়ে যাবে।
ফায়ার সার্ভিসের পক্ষ থেকে জানানো হয়, যুবদের নিয়ে প্রশিক্ষণ কর্মসূচি চালু আছে ইতিমধ্যে ।যুবরা জরুরি সময়ে রেসপন্স টিম হিসেবে কাজ করতে পারার জন্যে তাদের সাথে যোগাযোগ করতে পারে। তারা সর্বোচ্চ সহযোগিতা করবে। যুবদের ট্রেইনিং পরবর্তী আইডি কার্ড এবং হেলমেট,ভেস্ট সহ বিভিন্ন উপকরন সরবরাহ করা হবে।
ত্রাণ ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা বিভাগের প্রতিনিধিরা জানান, দুর্যোগকালীন প্রস্তুতি ও প্রতিক্রিয়ায় কমিউনিটি পর্যায়ে যুবদের অংশগ্রহণ বৃদ্ধির জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হবে। যুবদের মাধ্যমে জরুরী সময়ে ত্রান ডিস্ট্রিবিউশনের জন্যে যুবদের সাথে তাদের পক্ষ থেকে যোগাযোগ করা হবে। সিটি কর্পোরেশন এবং সরকারের কাছে সুপারিশ করা হবে যেন শহরের নালাগুলোর উপর স্লাব বসানোর হয় এবং কর্নফূলী নদীর উপকূলে বসবাসকারী জনগোষ্ঠীর জন্যে নদীর পাড়ে নদী ভাঙ্গন থেকে বাচতে বেড়িবাঁধ যেন দেওয়া হয়।
ম্যাজিস্ট্রেটরা জানান আজকের অনুষ্ঠানের মাধ্যমে যেসব দাবী উঠে এসেছে তা আমরা সিটি কর্পোরেশন এবং সরকারের কাছে প্রেরন করব এবং প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য সুপারিশ করবো।অনুষ্ঠানে যুব প্রতিনিধি চট্টগ্রাম ইয়ুথ হাবের সভাপতি জনাব আব্দুল মান্নান জিহাদ বলেন , “জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে দুর্যোগের ঝুঁকি বাড়ছে। আমরা চাই যুবদের নিয়ে সিস্টেমেটিকভাবে কাজ হোক, যেন সমাজের প্রতিটি স্তরে আমরা সচেতনতা ও প্রস্তুতির বার্তা পৌঁছে দিতে পারি। যেকোন ইমারজেন্সি পরিস্থিতে যুবরা কাজ করতে আগ্রহী এবং সর্বদা অঙ্গীকারবদ্ধ”
সভা উপস্থাপনা করেন ইয়ুথ ইনোভেশন ফর অ্যাকশন এর সদস্য ফাতেমা আক্তার, এবং কায়ো বাংলাদেশের সভাপতি সাকিবুল হাসান।
চট্টগ্রামের বিভিন্ন ওয়ার্ডের ১০টি যুব সংগঠনের ১২০ জন যুব প্রতিনিধি এই অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করেন, যাদের সক্রিয় অংশগ্রহণে অনুষ্ঠানটি প্রাণবন্ত হয়ে ওঠে।
অনুষ্ঠানের সার্বিক তত্ববধানে ছিলেন স্পন্সরশিপ অফিসার বিষু চক্রবর্তী,প্রজেক্ট অফিসার পিকুল দাশ জয়, ইয়ুথ পিয়ার গ্রুপ ফ্যাসিলেটটর আব্দুল তারেক।
Leave a Reply