বিশেষ প্রতিনিধিঃ
তিন বছর পেরিয়ে গেলেও আজও পুর্নাঙ্গ হতে পারেনি চট্রগ্রাম দক্ষিণ জেলা ছাত্রদল।২০১৮ সালের ১লা আগস্ট কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের সভাপতি রাজিব আহসান ও সাধারণ সম্পাদক আকরামুল হাসান জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল চট্রগ্রাম দক্ষিণ জেলার পাঁচ সদস্যবিশিষ্ট আংশিক কমিটির অনুমোদন দেন এবং অতিশীগ্রই পুর্নাঙ্গ কমিটি করার নির্দেশ প্রদান করে।পরে কেন্দ্রীয় ছাত্রদল ২ জনকে জেলা কমিটি হতে অব্যাহতি দিলে কমিটিতে সভাপতি হিসেবে শহিদুল আলম,সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ মহসিন এবং সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক কে এম আব্বাস নেতৃত্ব দিয়ে আসছেন প্রায় তিন বছর।দীর্ঘ তিন বছরে কমিটিকে পূর্ণাঙ্গ করা দূরে থাক ঐক্যমত্যের ভিত্তিতে দিতে পারেনি কোন ইউনিট কমিটিও।যদিও ২০১৯ সালে ৯ই ডিসেম্বর চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা ছাত্রদলের আওতাধীন সকল উপজেলা,থানা,পৌরসভা ও কলেজ কমিটি বিলুপ্ত ঘোষনা করলে তীব্র প্রতিবাদের মুখে কেন্দ্রীয় ছাত্রদল সেই স্বীদ্ধান্ত স্থগিত করেন।পরে আবার ২০২০ সালের ১৫ই জানুয়ারি কেন্দ্রীয় ছাত্রদল সেই সিদ্ধান্ত বহাল রাখেন।চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলার আওতাধীন ১৬ টি কলেজের মধ্যে ৮টি কলেজে আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণা দেন গত ৪ঠা মার্চ।তৃণমূল নেতা-কর্মীরা আশায় বুক বাধেন সকল বাধা বিপত্তি দূর হয়ে আন্দোলন সংগ্রামে রাজপথে থাকা দলের দুঃসময়ে জেলজুলুম উপেক্ষা করে জানবাজি রাখা ত্যাগীদের মুল্যায়ন হবে জেলার পুর্নাঙ্গসহ উপজেলা,পৌরসভা ও অন্যন্যা ইউনিট কমিটিতে।কিন্তু টাকার বিনিময়ে পদ বাণিজ্য করতে অযোগ্য ,অছাত্র, বিবাহিতদের কমিটিতে স্থান দিতে জেলার পুর্নাঙ্গ কমিটি ও জেলার সকল ইউনিটের কমিটি গঠন প্রক্রিয়া বাধাগ্রস্থ করছেন এমনটাই মনে করেই চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা ছাত্রদলের তৃনমূলের নেতা-কর্মিরা ক্ষোভ প্রকাশ করছেন।বাঁশখালী পৌরসভা ছাত্রদলের আহবায়ক প্রার্থী আজিম উদ্দিন প্রতিবেদককে জানান আমরা আন্দোলন সংগ্রাম করতে গিয়ে কারাবরণসহ সরকারের মামলা হামলার স্বীকার হয়েছি কিন্তু কমিটি গঠনের সময় দক্ষিণ জেলা ছাত্রদলের সভাপতি টাকার বিনিময়ে চাকুরীজীবী ও আন্ডারমেট্রিক লোককে বাঁশখালি পৌরসভার আহ্বায়ক ও সদস্য সচিব করার নাম প্রস্তাব করেছেন যা তৃনমূল ছাত্রদল কোনদিন মেনে নিবেনা, বিষয়টি ইতোমধ্যে আমরা কেন্দ্র হতে দায়িত্বপ্রাপ্ত চট্টগ্রাম বিভাগীয় টিমসহ কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের নেতৃবৃন্দের কাছে প্রমাণসহ উপস্থাপন করেছি। আনোয়ারা উপজেলা ছাত্রদলের আহবায়ক প্রার্থী এডভোকেট অহিদুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, কমিটি নিয়ে সিনিয়রদের যে স্বীদ্ধান্ত তা মেনে জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলকে এগিয়ে নিয়ে যেতে সর্বদা তিনি প্রস্তুত থাকবেন।বাঁশখালী উপজেলা ছাত্রদলের আহবায়ক প্রার্থী এডভোকেট সাকেরুল ইসলাম সাকিব বলেন,আমি সাবেক মন্ত্রী দক্ষিণ জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি আলহাজ্ব জাফরুল ইসলাম চৌধুরীর প্রার্থী সে হিসেবে আশা করি সভাপতি শহিদ ভাই কাকে বানাতে চাচ্ছেন তা আমার দেখার বিষয় নয়,আমি আশাবাদী আমাকেই আহবায়ক হিসেবে আনবে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক আনোয়ারা,বাঁশখালী,চন্দনাইশ,বোয়ালখালী ও পটিয়া উপজেলা ছাত্রদলের একাধিক আহ্বায়ক ও সদস্য সচিব প্রার্থী প্রতিবেদককে অভিযোগ করেন বিগত ১৩ বছর যারা আওয়ামী সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলন সংগ্রামে রাজপথে ঠিকে আছে তাদের বাদ দিয়ে জেলা সভাপতি শহিদুল আলম টাকার বিনিময়ে অতিথি পাখির মত অযোগ্য ব্যক্তিদের দিয়ে উপজেলা,পৌরসভা কলেজ কমিটি দেওয়ার পায়তারা চালাচ্ছে তার তদন্তপুর্বক বিচার চাই দলের হাইকমান্ড তথা কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের কাছে।তারা আশাবাদ ব্যক্ত করেন, বিএনপি চেয়ারপার্সন দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া ও তারুণ্যের অহংকার বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের ভ্যানগার্ড জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলকে তৃণমূল থেকে সারা দেশে প্রতিটি ইউনিটে ত্যাগী নির্যাতিত যোগ্যদের দিয়ে যেভাবে কমিটি করা হচ্ছে সেভাবে চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা ছাত্রদলের পূর্ণাঙ্গ কমিটি ও ইউনিট কমিটি গঠন করলে আগামীর আন্দোলন সংগ্রামকে সফল করে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠায় রাজপথে দলীয় কর্মসূচী পালনে অগ্রণী ভূমিকা রাখবে।
কমিটির বিলম্বের বিষয়ে ও কবে নাগাদ জেলা ছাত্রদলের পুর্নাঙ্গ কমিটি ও ইউনিট কমিটি সম্পর্কে জানতে চাইলে প্রতিবেদককে চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা ছাত্রদলের সিনিয়র যুগ্ম সম্পাদক কে এম আব্বাস বলেন জেলা ও ইউনিট কমিটি গঠনের এখতিয়ার সম্পুর্ন কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের যার প্রতিটি বিভাগে কেন্দ্র হতে গঠিত বিভাগীয় কমিটির চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিটির মাধ্যেমে ইতোমধ্যে আমাদের চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা ছাত্রদলের পক্ষ থেকে জমা দেওয়া তালিকা যাচাই বাচাই শেষের দিকে আশা করি খুব শীগ্রই কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক অবশ্যই বিগত আন্দোলন সংগ্রামে যারা চট্টগ্রাম দক্ষিণ ছাত্রদলের কর্মসুচিতে ছিল সেসব ত্যাগীদের যথাপোযুক্ত মূল্যায়ন করে কমিটি দিবেন,যোগ্য কেউ বাদ যাবেনা। জেলা সভাপতির বিরুদ্ধে বিভিন্ন উপজেলা, পৌরসভাসহ বিভিন্ন ইউনিটের পদপ্রত্যাশীদের আনীত অভিযোগ সম্পর্কে কে এম আব্বাস এ বিষয়ে বলেন অভিযোগ থাকলে কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের কাছে প্রমাণিত হলে তারপর তিনি মন্তব্য করবেন বলে জানান।
সকল অভিযোগ অস্বীকার করে চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা ছাত্রদলের সভাপতি শহিদুল আলম শহীদ প্রতিবেদককে বলেন, আমার বিরুদ্ধে যারা অভিযোগ করেন তারা সম্পূর্ণ উদ্দেশ্যমূলকভাবে প্রচারণা চালাচ্ছেন।তাদের হাতে কোন প্রমাণ থাকলে হাইকমান্ডকে দিক প্রমাণিত হলে অবশ্যই যে শাস্তি হয় মেনে নেব। ইউনিট কমিটি গঠনের এখতিয়ার শুধমাত্র কেন্দ্রের সেখানে আমরা শুধুমাত্র সুপারিশ করি, যাচাই-বাছাই করবেন কেন্দ্রের গঠিত বিভাগীয় টিম।তবে খুবই শীঘ্রই দক্ষিণ জেলা ছাত্রদলের সকল ইউনিটের কমিটি দেওয়া হবে এবং সেখানে নিশ্চিতভাবে আমি বলতে চাই যোগ্য, ত্যাগী ও আন্দোলন সংগ্রামে যাদেরকে রাজপথে দেখেছি তাদেরকে কমিটিতে দায়িত্ব পেতে সুপারিশ করেছি কেউ বাদ গেলে তাদেরকে অন্য ইউনিটে যুক্ত করা হবে।
প্রসংগত ছাত্রদলের জেলা কমিটিতে পদে আসতে অবিবাহিত ও ২০০০ সালের এসএসসি হতে হবে,এবং উপজেলা/ পৌরসভায় কমপক্ষে শিক্ষাগত যোগ্যতা এসএসসি পাশ হতে হবে এবং নিয়মিত ছাত্র হওয়ার বিধান রয়েছে সংগঠনের গঠনতন্ত্রে।যদিও ২০১৮ সালে ঘোষিত কমিটিতে একজন ছাড়া বাকি সকলেই বিবাহিত।সেই কমিটি আজও রয়েছে দক্ষিণ জেলায়।
Leave a Reply