আনোয়ারা (চট্টগ্রাম)প্রতিনিধি,
চট্টগ্রামের আনোয়ারা উপজেলার পরৈকোড়া ইউনিয়নে মামুরখাইন গ্রামের পাশ দিয়ে বয়ে গেছে আলী মিয়া চৌধুরী সড়কে বেওলা খালের ওপর নির্মিত বেওলা সেতু।তবে সেতু থাকলেও সংযোগ সড়কের বেহাল দশার কারণে এর সুফল পাচ্ছে না স্থানীয় বাসিন্দারা। সেতুটির সংযোগ সড়ক দিয়ে যান চলাচল তো দূরের কথা হেঁটে চলাচল করাও দুষ্কর। এভাবেই চলছে প্রায় একযুগ। এতে ওই পথ দিয়ে চলতে গিয়ে চরম ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন কয়েকটি গ্রামের হাজারো মানুষ।
জানা গেছে, ২০১৬-১৭ অর্থবছরে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরের অর্থায়নে সেতু কালভার্ট নির্মাণ প্রকল্প উপজেলার ৯নং পরৈকোড়া ইউনিয়নের মামুরখাইন গ্রামে আলী মিয়া চৌধুরী সড়কে বেওলা খালের ওপর ৩০ লাখ ৯০ হাজার টাকা ব্যয়ে ৪০ ফুট দৈর্ঘ্যের আরসিসি সেতুটি নির্মাণ করা হয়। প্রায় ৭ বছর পার হলেও সংযোগ সড়কে বেহাল দশা রয়ে গেছে। মামুরখাইন এলাকাসহ আশপাশের কয়েকটি গ্রামের লোকজনকে ঝুঁকি নিয়ে কাদার মধ্য দিয়ে পারাপার হতে হচ্ছে। শিক্ষার্থীদের স্কুল-কলেজে যাওয়া আসার সময় খাল পারাপার হতে গিয়ে কাদায় পড়ে বই-খাতা ও জামা-কাপড়ও নষ্ট হচ্ছে।
গ্রামবাসী জানায়, সেতু নির্মাণের পর তারা কিছুটা আনন্দিত হলেও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের অবহেলার কারণে সেতুর দুই পাশে সংযোগ সড়কের কাজ হয়নি। সেতুর দুই পাশে মাটি ভরাট না করার কারণে সড়কটি খালে তলিয়ে গেছে।জনদূর্ভোগের কথা চিন্তা করে ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদ (এমপি) কে জানালে গত ছয় মাস পূর্বে সেতুটির দুই পাশে যেখানে বৃষ্টি পড়লে হাঁটা চলা অনুপযোগী সেখানে প্রায় ৫০০ফুঠ মতো আর সিসি ঢালায় করে দেয়। জনস্বার্থে সেতুটির মুরালি সড়ক পর্যন্ত দুই পাশের সংযোগ সড়কের কাজ জরুরি ভিত্তিতে করা হোক।
বিলের ওপর নির্মিত সেতুর দুই পাশের সংযোগ সড়কটি কয়েক বছর ধরে ভেঙে খাদে পড়ে আছে। উধাও হয়ে গেছে সড়কের ইটগুলোও। ইটের সড়কটি এখন কাচা রাস্তায় পরিণত হয়েছে। যেকারণে গত ৫ থেকে ৬ বছর ধরে সড়কের ওপর দিয়ে কোন ধরনের যানবাহন চলাচল করছে না। এতে প্রতিদিন চরম ভোগান্তি পোহাতে হয় অন্তত ৭ গ্রামবাসীর।
স্থানীয় আওয়ামীলীগ নেতা এম.নুরুল হুদা চৌধুরী জানান, পরৈকোড়া ইউনিয়নের পূর্ব এলাকার মানুষ একটি সড়ক সত্তার হাট হতে চামুদরিয়া শাহ্ আলী রজা (রহঃ) সড়ক দিয়েই চলতে হচ্ছে। পাশে দুই সড়ক মুচ্ছদ্দীপাড়া হতে মামুর খাইন হয়ে ওষখাইন পূর্বপাড়া সড়ক ও তালসরা মুরালীঘাট হতে মামুর খাইন বাংলা বাজার ও তাতুয়া হয়ে দত্তের হাট পর্যন্ত আলী মিয়া চৌধুরী সড়ক উন্নয়নে অভাবে জনগুরুত্বপূর্ণ সড়ক হলেও জনগণের চলাচল যানবাহন চলাচলের অযোগ্য হয়ে পড়ে আছে।সেতুর সংযোগ সড়ক বেহাল দশার কারণে বন্ধ রয়েছে যান চলাচল। যেকারণে কয়েক বছর ধরে পরৈকোড়া ইউনিয়নের অন্তত ৭টি গ্রামের হাজারও কৃষক তাদের কৃষিপণ্য মাথায় করে নিয়ে পায়ে হেঁটে বাজারজাত করছেন। স্থানীয় শিক্ষক-শিক্ষার্থীরাও পায়ে হেঁটে নিয়মিত তাদের শিক্ষা-প্রতিষ্ঠানে চলাচল করছেন।
ওষখাইন তালীমুল মাদ্রাসার অধ্যক্ষ মাওলানা আজিজুল হক বলেন,সেতুর সংযোগ সড়কে খানাখন্দে ভরা, আমাদের চলাচলে ভোগান্তির যেন শেষ নেই। আমরা বাড়ি থেকে বের হলেই হাটতে হাটতে ক্লান্ত হয়ে যেতে হয়। সড়কটি আমাদের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এই সড়ক দিয়ে পটিয়া উপজেলাসহ মুরালীঘাট বাজার ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে যাতায়াত করে থাকি। গত কয়েক বছর ধরে সড়কটির এমন অবস্থা হয়ে থাকলেও যেন দেখার কেউ নেই। আমরা সেতুর সংযোগ সড়কটি দ্রুত মেরামতের দাবি জানাচ্ছি।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান আজিজুল হক চৌধুরী বাবুল বলেন, ব্রিজের সংযোগ সড়কে খানাখন্দে ভরা মানুষের চলাচলে চরম অসুবিধা হচ্ছে। সড়কটি এলজিইডির অন্তভূক্ত হয়ে ঢাকা সচিবালয় থেকে নতুন আইডি নম্বর পাশ হয়ে এসেছে।উধ্র্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলাপ-আলোচনা করে ওই সেতুর সংযোগ সড়ক দ্রুত মেরামত করার ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।সড়কটি নতুন আই ডি নাম্বারে এলজিইডি তে অন্তর্ভুক্ত করায় ৯নং পরৈকোড়া ইউনিয়নবাসী ও পরিষদের পক্ষ থেকে মাননীয় ভূমিমন্ত্রী আলহাজ্ব সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদ এমপি মহোদয়ের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।
উল্লেখ্য মুরালি তালসরা হতে মামুর খাইন হয়ে তাতুয়া দত্তের হাট পর্যন্ত সড়কটি ১৯৮৫ সালে মরহুম আলী মিয়া চৌধুরী সড়ক হিসেবে নামকরণ করা হয়।
Leave a Reply