1. news@dainikchattogramerkhabor.com : Admin Admin : Admin Admin
  2. info@dainikchattogramerkhabor.com : admin :
শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১২:১৫ অপরাহ্ন
শিরোনামঃ
চমেক হাসপাতালের নতুন পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোহাম্মদ তসলিম উদ্দীন চট্টগ্রাম নগরীর সিএমপির ইপিজেড থানা পুলিশের অভিযানে (১০) জন, জুয়াড়ি গ্রেফতার। মোরেলগঞ্জের নিশানবাড়িয়ায় ইউপি সদস্যর জমি গভীর রাতে দখল ফিলিস্তিনকে রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দিলো ১৪২ দেশ, সর্বশেষ জ্যামাইকা পটিয়ার সংসদ সদস্য জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আলহাজ্ব মোতাহেরুল ইসলাম চৌধুরী এমপির জন্মদিন উদযাপন করলেন পটিয়া উপজেলা কৃষকলীগ। বঙ্গবন্ধু মানব কল্যাণ পরিষদ এর চট্টগ্রাম বিভাগের কমিটি ঘোষণা মাদকের ভয়াল থাবায় গ্রাস তরুন প্রজন্ম, সর্বোচ্চ ঝুঁকিতে পথশিশুরা-মোহাম্মদ আলী ইপিজেড থানা কমিউনিটি পুলিশিং এর উদ্যোগে আইন শৃঙ্খলা ও কিশোর গ্যাং প্রতিরোধ বিষয়ক মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত চট্টগ্রামে র‍্যাবের নামে চাঁদা আদায়, গ্রেপ্তার ৪ বেলখাইন স্পোটিং ক্লাবের অলনাইট অলিম্পিক ফুটবল টুর্নামেন্টের ফাইনাল ম্যাচ সম্পন্ন

প্রাসঙ্গিক ভাবনা ও কুরবানি : লায়ন মোঃ আবু ছালেহ্

  • সময় শনিবার, ১৭ জুলাই, ২০২১
  • ৩০৯ পঠিত

প্রাসঙ্গিক ভাবনা ও কুরবানি :

লায়ন মোঃ আবু ছালেহ্

গত বছর দুয়েক আগেও লাখ টাকায় গরু আর কয়েকটা খাসি কিনে কুরবানী দিতেন ব্যবসায়ী রহমান সাহেব। ভেতরে ভেতরে ব্যাংক ঋণ তাঁকে ঘুণপোকার মতো কখন যে সর্বনাশ করে ফেলেছে তিনি টেরও পাননি। ঘুণপোকায় খাওয়া ঘরের খুঁটি পড়ে গেলে ঘর যেভাবে ধপাস করে পড়ে যায়; কোটি কোটি টাকার মালিক রহমান সাহেবেরও একই দশা আজ। তাঁর আগের মতো কুরবানি দেয়ার অবস্থা নেই, বিশ্বাস করুন, জেনেশুনেই বলছি।

মোনাব্বির ভাই চাকরী হারিয়েছেন দেড় লাখ টাকা বেতনের। ছয় মাস বেকারত্ব কাটিয়ে আবার একটি ধরেছেন তিনভাগের দু’ভাগ বেতনে। সংসার চালানো দায়। যা পাচ্ছেন তা দিয়ে বেকারত্বকালীন দায় শোধ করবেন নাকি ব্রাক ইউনিভার্সিটি পড়ুয়া মেয়ের সেশন ফি দেবেন? এই চিন্তায় হাবুডুবু খাওয়া মোনাব্বির ভাই কুরবানির কথা কী ভাবছেন জানি না। জানার ফুরসৎও নেই।

কাতারে কাজ হারিয়ে রফিক মাসে চৌদ্দবার বউ তালাকের হুমকি দিচ্ছেন; আর কথায় কথায় ‘মাগীর ঝি মাগী’ ছাড়া বউকে কিচ্ছু বলছেন না। চার ছেলেমেয়ের সংসার রফিকের। যত ঋণই থাকুক বাচ্চাদের মুখের দিকে তাকিয়ে কুরবানির শেয়ার দিতেন তিনি। এবার পরিষ্কার কথা- “পারুম নারে মাগী, পারলে তোর বাপের বাড়ি থেকে এনে দে”।

রেশমার স্বামী বাকি বিল্লাহ মার্চেন্ডাইজিং করে মাসে কামাতেন তিন কী সাড়ে তিন লাখ। তিন বছর কাজ নেই। জমাঝোলা সব খেয়ে ফতুর হয়েছেন তাঁরা। লিজিং কোম্পানি তাঁদের ফ্ল্যাট নিলামে তোলার হুমকী দিয়ে রেখেছে। খবর শুনে রেশমার জ্বালাপোড়া রোগ দ্বিগুণ বেগে তেঁতে উঠেছে। গত বছরও সত্তুর হাজার টাকায় গরু কিনেছেন। অথচ, এবার শেয়ারে কুরবানি দেয়ার জন্যই তিনি ঘুরছেন। গতকাল রাত পর্যন্ত কোন অংশীদার পাননি বলে ফোনে আফসোস করে জানিয়েছেন আমাকে।

ছোট ভাই কাজ হারিয়েছে বলে চাপ পড়েছে আমার উপর। তাই ফোন করে তাকে বললাম, গরুটা এবার কম দামেই কেনো।

এই টুকরো টুকরো গল্পগুলো নিদর্ষ্টি কোন এলাকার নয়। বলতে গেলে বিশাল একটা জনগোষ্ঠির, সারাদেশের; এবং এটাই বাস্তবতা।

কুরবানি সুনির্দিষ্ট একটি এবাদত, ওয়াজেব। তবে সামর্থ্যবানদের উপরেই। আল্লাহ কোনভাবেই বান্দাদের উপর জুলুম করেন না। অথচ, “জুলুমটা” আমরা আমাদের ঘাড়ে নিয়ে নিচ্ছি। কিভাবে? শুনুন-

আমাদের উপর অনেকগুলো ফরজ এবাদত আছে, ওয়াজেব আছে, সুন্নতও আছে।

নামাজ কয়জনে পড়ছি? জাকাত কি দিচ্ছি? হালাল রুজি তো ফরজের মতই। সুদ তো জঘন্যতম হারাম। নারী নির্যাতন কিংবা বউ তালাক নিকৃষ্টতম কাজ। এই কাজগুলোর যা করা দরকার তা করছি না, যা করা নিষেধ তা বন্ধ করছি না। কেন করছি না? কারণ একটাই- সামর্থ্যের বহিঃপ্রকাশ ঘটানো। এখানে এবাদতটাকে মূখ্য হিসেবে আমরা দেখছি না। নিকৃষ্টতম শাড়ি লুঙ্গি দিয়ে যাকাত দিচ্ছি লোক দেখানোর জন্য। শারিরীকভাবে অসামর্থ্য হওয়া সত্বেও বয়ষ্ক বাবা মাকে মক্কা মদিনায় জিয়ারতে পাঠাচ্ছি। কেন পাঠাচ্ছি? ঐ যে লোক দেখানো! আমাদের অনেক টাকা আছে। বয়ষ্ক পঙ্গু বাবা মা হজ্বের নিয়ম কানুন কতটুকু কী করতে পেরেছেন সেটা দেখছি না।

একই ভাবে, কুরবানির কথাও প্রযোজ্য। কেউ কেউ ঘুষ দুর্নীতির টাকায় লাখ লাখ টাকায় গরু সাজিয়ে আনছেন। কেড্স পায়ে আদুরের দুলাল মিলিয়ন টাকার গরুর পেছনে পেছনে ছুটছেন। একি আনন্দ। এই আনন্দ কোথায় রাখেন তারা?
আবার রহমান সাহেব, মোনাব্বির ভাই, রফিক কিংবা রেশমাদের অবস্থাটা ভিন্ন। তারাও কুরবানি দিতে চান। সামর্থবান ছিলেন একদা। এবার অসামর্থ, তবুও দিতে চান কিংবা দেবেন। কেন দেবেন? ঐ যে কুরবানি না দিলে লোকে কী বলবে? ছেলে মেয়ে কার মুখের দিকে তাকাবে? কুরবানি তো সামর্থ্যের বহিঃপ্রকাশ ঘটায়, প্রাচুর্যের নিয়ামক। প্রত্যকেই চায় তার প্রাচুর্যের প্রকাশ ঘটুক।

একদিকে প্রাচুর্য্যের প্রকাশ অন্য দিকে নিরন্ন মানুষের হাহাকার, ঘুণে পোকা খাওয়া মানুষের ধপাস করে পড়ে যাওয়া। কী বিচিত্র এই দেশ! কী বিচিত্র এই দেশের মানুষ! “ফরজে আ’ইনের ” ধারে কাছে নেই, অথচ, ‘ওয়াজেব’ আমলে কত তোড়জোড়। ধর্মের বাহ্যিক প্রকাশে কত তৎপর। ধর্ম শেখায় মনুষ্যত্ব, ভালবাসা, ধর্ম শেখায় সহমর্মিতা। অথচ, মনুষ্যত্ব আজ নির্বাসনে। অমানবিকতা, নিষ্ঠুরতা কুঁড়ে কুঁড়ে খাচ্ছে আমাদেরকে। সবচে ভাল লাগত যদি “মনুষ্যত্ব” নামক গুণটি ভাইরাস হয়ে মানুষে মানুষে ছড়িয়ে পড়তো। তাহলে প্রাচুর্য প্রকাশের এসব প্রার্থনাও লাগতো না। ধর্মের বাহ্যিক প্রকাশের চেয়েও এর ভেতরের প্রকাশটাই মূখ্য হয়ে দাঁড়াতো।

খবরটি শেয়ার করুন..

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর..
কপিরাইট © ২০২০ সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
ওয়েবসাইট ডিজাইন: ইয়োলো হোস্ট