বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতি বেলার ন্যাশনাল কনফারেন্সে দেশের পরিবেশগত ভারসাম্য রক্ষায় আগামি এক বছরে দেশের সাত বিভাগে নদী দখল ভরাট ও অবৈধ বালু উত্তোলন বন্ধ এবং কক্সবাজারে ৭০০ একর বনভূমি দখল করে সরকারি আবাসন ও ৫১ একর পাহাড়ি জমিতে প্রশিক্ষণ কেন্দ্র বন্ধে গৃহিত আইনি কার্যক্রম এগিয়ে নেয়া, কুহেলিয়া নদী দখল করে রাস্তা নির্মান বন্ধ, সেন্ট মার্টিনের পলিথিন আগ্রাসন রোধ, বান্দরবানের সাঙ্গ ভ্যালির সংরক্ষিত বনাঞ্চলের ভার্জিন ফরেস্ট রক্ষা এবং চট্টগ্রাম মহানরগীর সিআরবি নিয়ে সম্ভাব্য সকল ধরনের আইনি পদক্ষেপ নিবে বেলা।
এছাড়াও আগামি বছর পাহাড় নিধন বনাঞ্চল উজাড় প্রতিরোধে সব ধরণের সম্ভ্যাব্য আইনি পদক্ষেপ গ্রহন করার সিদ্ধান্ত হয়েছে। আজ ২২ ডিসেম্বর বুধবার দিনব্যাপী সাভারের বিসিডিএম মিলনায়তনে আয়োজিত কনফারেন্সে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন বেলার প্রধান নির্বাহী সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান। কনফারেন্সে বেলা টাঙ্গাইল বরিশাল চট্টগাম রাজশাহী খুলনা ও ঢাকা বিভাগ থেকে ৩৫জন নেটওয়ার্ক সদস্য অংশ গ্রহন করে দেশের সার্বিক পরিবেশ পরিস্থিতি ও বেলার পরিচালিত লিগ্যাল কার্যক্রমের ধারাবাহিকতা সম্পর্কে প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন।
কনফারেন্সে চিহ্নিত পরিবেশ সংকটাপন্ন ইস্যুর মধ্যে রয়েছে, পটুয়াখালীর প্রবাহমান কচ্ছপ খাল, চিংগরিয়া খাল বহালগাছিয়া খালের অবৈধ দখল উচ্ছেদ, বরিশালের কির্তনখোলা নদী, মলগিরি খাল, লাকুটিয়া ও জেল খাল গৌরনদী খাল দখল দূষণমুক্ত করা এবং ৩০০ বছরের পুরানো ঐতিহ্যবাহী সীতারাম দিঘির ভরাট প্রতিরোধ করা।
পিরোজপুর জেলার কঁচা বলেশ্বর সন্ধ্যা নদী ও শীতলা খালের দখল দূষণ বন্ধে আইনি পদক্ষেপ গ্রহন । বরগুনার খাকদোন পায়রা বিষখালী বলেশ্বর নদী রক্ষায় প্রয়োজনীয় আইনি উদ্যোগ গ্রহন করা। এছাড়াও সিলেট বিভাগ থেকে অবৈধ পাথর ও বালু উত্তোল বন্ধ এবং অতিরিক্ত পর্যটক আগ্রাসনের কারণে রাতারগুলের প্রাকৃতিক ভারসাম্য নষ্ট হওয়া বন্ধে কাজ করবে বেলা।
রাজশাহী বিভাগে আগামী বছরে বেলার পক্ষ থেকে চলনবিল সংকুচিত হওয়া প্রতিরোধ ও বরেন্দ্র অঞ্চলের অতিরিক্ত ভূগর্ভস্থ পানি উত্তোলন বন্ধে সামাজিক সচেতনতা সৃষ্টি ও প্রয়োজনীয় আইনি পদক্ষেপ গ্রহন করার সিদ্ধান্ত হয়।
এদিকে দেশের অন্যতম শিল্প নগরী চট্টগ্রামের সিটি গেইট থেকে মিরসরাই পর্যন্ত পাহাড় কেটে ও পাহাড়ি ছড়া ভরাট করে গড়ে উঠা ইস্পাত শিল্প কারখানার আগ্রাসন প্রতিরোধে সব ধরনের পদক্ষেপ গ্রহন করার প্রস্তাবও কনফারেন্সে গৃহিত হয়। এছাড়াও এই সব এলাকায় গভীর নলকূপ দিয়ে অতিরিক্ত ভূগর্ভস্থ পানি উত্তোলন করায় অনেক এলাকা পানি শূন্য হয়ে পড়েছে। এই বিষয়ে ইতোমধ্যে বেলা আইনি পদক্ষেপ গ্রহন করেছে। আগামীতে সেসব বাস্তবায়নে কার্যকর পরিকল্পনা গ্রহন করা হবে।
দিনব্যাপী আয়োজিত কনফারেন্সে বেলার হেড অব প্রোগ্রাম মোহাম্মদ খোরশেদ আলম, লিগ্যাল কোর্ডিনেটর ও হাইকোর্টের আইনিজীবি সাঈদ আহমেদ কবীর, ফিল্ড কোর্ডিনেটর এ এম এম মামুন, বরিশাল বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত বেলার কর্মকর্তা রেহনুমা নুরাইন, চট্টগ্রাম বিভাগের বারিশ হাসান চৌধুরী, ঢাকা বিভাগের হাসানুল বান্না, টাঙ্গাইল কার্যালয়ের সাইমা আফরোজ উপস্থিত ছিলেন। বিভাগীয় সমন্বয়কদের মধ্যে লিংকন বায়ান, চট্টগ্রামের বিভাগের জিয়াউর রহমান কল্লোল, খুলনা বিভাগের মাহফুজুর রহমান, রাজশাহীর তন্ময় কুমার স্যানাল, টাঙ্গাইলের গৌতম চন্দ্র চন্দ ও সিলেটের শাহ শাহেদা উপস্থিত ছিলেন।
Leave a Reply