সবুজে মোড়ানো সম্ভাবনাময় বিলের বুকজুড়ে সাজানো কলাবাগান। এ অঞ্চলে দেখা যায় কলা গাছের সবুজ পাতার আড়ালে ঝুলে আছে কাঁচা-পাকা কলার ছড়া। সময়ের সাথে সাথে ‘পাহাড়ের পর এবার ধান জমিতে কলা চাষে অর্থনেতিক স্বচ্ছলতার পথে হাঁটছে চাষীরা।
মহেশখালী উপজেলার হোয়ানক ইউনিয়নের কলাচাষী রমিজ আলম বাণিজ্যিক ভাবে কলা চাষ করে লাভের মুখ দেখছেন। তুলনামূলক কম খরচে বেশি লাভ পাওয়ায় কলা চাষে ঝুঁকছেন তিনি। চাষযোগ্য জমিতে বাণিজ্যিক ভাবে এসব কলার চাষ করা হচ্ছে।
উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, চলতি মৌসুমে উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নে ৭ হেক্টর জমিতে বাণিজ্যিক ভাবে কলা চাষ হয়েছে। উপজেলার জনতাবাজার-গোরকঘাটা প্রধান সড়কের হোয়ানক ইউনিয়নের ছনখোলা পাড়া গ্রামের পশ্চিমের বিলে ঘুরে এমন চিত্র চোখে পড়ে। এই গ্রামীণ মেঠো পথের রাস্তার পাশে সারি সারি কলার গাছে ঝুলছে কলার কাঁদি।
রমিজ আলম হোয়ানক ইউনিয়নের ছনখোলা পাড়া এলাকার মরহুম গোলাম কাদেরের পুত্র। রমিজ আলমের দুই ছেলে দুই মেয়ে সন্তান সহ ৪ সদস্যের পরিবার তার। ছোট-খাটো ও কৃষি কাজ করলে অভাব-অনটন পিছু ছাড় ছিলো না। দীর্ঘ দিন ধরে পান বরজের পাশপাশি জীবন-জীবিকার তাগিদে অবশেষে শুরু করেন কলা চাষ।
বাড়ির কয়েক কিলোমিটার দুরুত্বে ১৫০ কড়া জমিতে সাগরি কলার বাগান করার মাধ্যমে রমিজ আলম বেকারত্ব জীবনের অবসান হয়। এখন সংসারে তাঁর ফিরে এসেছে আর্থিক সচ্ছলতা। আর পিছনে ফিরে থাকাতে হয়নি তাঁর। এলাকায় এখন একজন সফল কলা চাষী হিসেবে পরিচিতি লাভ করে তিনি কলাচাষে বিপ্লব ঘটিয়েছেন অজপাড়া গ্রামে।
তার কলা বাগান দেখতে বা পাইকারী দামে কলা ক্রয় করতে ছুটে আসছেন ব্যবসায়ীরা।
নিয়মিত বেচা বিক্রি চলছে পুরোদমে।
রমিজ আলম জানান, তিনি জমি বর্গা নিয়ে কলা চাষ শুরু করেছেন। বর্তমানে তার কলাবাগানে ৭’শ মতো কলার কাঁদি রয়েছে। বাকি গুলোতে কাঁদি আসতে শুরু করেছে।
প্রতিটি চারার মূল্য গুণগত মান অনুসারে ৩০-৪০ টাকা। চারা কলার গাছ লাগানের ৯ থেকে ১২ মাসের মধ্যে কলা পাওয়া যায়।
জমিতে প্রথমবার চারা কলাগাছ রোপণ করলে ওই কলা গাছ থেকে বংশবৃদ্ধির ফলে ৩/৪ বছর নতুন করে কোন কলা গাছ রোপণ করতে হয় না। বরং প্রতিটি মা গাছ ৪/৫ টি করে জন্মানো চারা গাছ বিক্রি করা যায়।
এভাবে সব খরচ মিলে তার দেড় লক্ষ টাকা মত খরচ হয়েছে। সব কলা বিক্রি করে তিনি
বছরে সাড়ে ৩ লক্ষ থেকে ৪ লক্ষ টাকা পর্যন্ত আয় করতে পারবেন বলে আশা করেছেন।
এভাবে প্রতিবছর সফল কলা চাষি হিসেবে প্রাপ্ত আয় থেকে আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন করে নিজেকে সফল কলা চাষী হিসেবে সমাজে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেছেন রমিজ আলম।
মহেশখালী উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা রফিকুল ইসলাম বলেন, কলা চাষের জন্য উপযোগী স্থান। মহেশখালীর এখানকার জায়গা গুলো উচু ও ধোঁয়াশা হওয়ায় কলার চাষের জন্য উপযোগী। এছাড়া চাষীদের পরামর্শ দেওয়া হয়।
Leave a Reply