শিক্ষা আমাদের কি তৈরি করতেছে? বিদ্বান, জ্ঞানী নাকি বিজ্ঞানী?
চলুন একটু দেখি
“প্রয়োজনীয়তাই উদ্ভাবনের জনক”এই প্রবাদটির সাথে তাল মিলিয়ে দৈনন্দিন জীবনে যুক্ত হচ্ছে নতুন নতুন শাখা।
উচ্চ মাধ্যমিক পর্যায়ের একজন শিক্ষার্থী হিসেবে আমি হতভাগাটাও কম বেশি উক্ত শাখা প্রশাখার সাথে পরিচিত। শিক্ষার মাঠেও কিন্তু নতুন শাখা প্রশাখার খোজ আমরা পাই। যেমন ধরেন creative system,, Autopass system ((যদিও পরিস্থিতির স্বীকার)) etc.
কিন্তু আমাদের মধ্যে কি আদো creativityটা জন্মায়ছে?কিংবা আমরা কি সত্যিই এগিয়ে চলেছি?
উত্তর আসবে হ্যাঁ অথবা না। তবে হ্যাঁ বা না বললেই কি উত্তরটা সম্পূর্ণ হয়?
আমার মনে হয় আমরা শিক্ষার দেহটা দেখেছি মনটা বা ভিতরটা নয়,যদি ভিতরটা দেখেই থাকি তাহলে কেনই বা”মিথ্যা বলা মহাপাপ”কথাটি জানা বা শিখার পরেও মিথ্যা বলতেছি কেনইবা পাওয়ারের দাপটে ভরা মজলিশে বয়স্ক লোককে নিচে/মাটিতে বসিয়ে আমি উপরের চেয়্যারে বসে বেয়াদবের মতো কথা কচ্ছি?
কালাম স্যারের ভাষ্যমতে,
“একটি বই একশ’জন বন্ধুর সমান.. কিন্তু একজন ভালো বন্ধু পুরো একটি লাইব্রেরির সমান ”
উক্তিটি জানার পরেও কেনই-বা অর্থ প্রাচুর্য, স্বার্থ সিদ্ধি ও স্তর(ধনী-গরিব) বিবেচনা করে বন্ধুত্ব নামক শব্দটা-কে কলঙ্কিত করতেছি?
এতেই শেষ নয়,,, পাঠ্যপুস্তকগতভাবে যদি বিবেচনা করেন তা হলে দেখতে পাবেন বিরাট কান্ড।,যেমন-
বাংলার ক্ষেত্রে যদি বলি-
আমরা জানি কবিরা/ লেখকরা কত সুন্দর করে স্নিগ্ধ ভাষায় গ্রাম বাংলার প্রকৃতির মলিনতা এবং সৌন্দর্য সম্পর্কে বর্ণনা দিয়েছেন।সাথে এটাও যোগ করেছেন যে! কিভাবে প্রকৃতিকে রক্ষা ও উপভোগ করতে হয়।কিন্তু আমরা দেখুন! গাছ কেটে, নদী ভরাট করে,নদীর বালি চুরি করে, ময়লা আবর্জনা ফেলে পরিবেশটার ১২টা বাজাই দিচ্ছি।এখন আপনারাই বলুন? কি-ই বা পেলাম কবি বা লেখকের লিখনি পড়ে!……
আসলে আমাদের স্বার্থকতাটা কোথায় ?
শিক্ষা কি আমাদের বিদ্বান বানাচ্ছে নাকি জ্ঞানী নাকি বিজ্ঞানী?
আমরা সবাই জানি এবং পড়েছি সিগারেট/ধুমপান স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর,এটি মৃত্যুর কারণ।
এটা জেনে- ক’জনই বা সিগারেট/ধুমপান ছেড়েছি বলেন তো?
বিদ্বান, জ্ঞানী, আর বিজ্ঞানীর মধ্যে ঠিক এই জায়গাই পার্থক্য।
যারা “ধুমপান স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর” এটা শিখেছে তারা বিদ্বান,যারা ধূমপান স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর এটা জেনে বা শিখে ধুমপান পরিহার করেছে তারাই জ্ঞানী। আর যারা এটা শিখে পরিহার করে দশের ভালোর জন্য ধূমপান প্রতিরোধের ব্যবস্থা করেছে তাঁরাই হচ্ছে বিজ্ঞানী।
English -এর ক্ষেত্রে যদি বলি–
আমি হলপ করে বলতে পারি বর্তমানে ইংলিশ আমাদের দেশের শিক্ষার্থীদের কাছে একটি সাবজেক্ট হিসেবে পরিচিত মাত্র ,ভাষা হিসেবে নয়। ৯০% পোলাপান এটা পরিক্ষায় পাস করার জন্য পড়ে এবং অমুখ পৃষ্ঠার তমুখ Role মুখস্ত করার পিছনে ছুটে।দুঃখের বিষয় হলেও সত্য যে আমাদের শিক্ষকরা আমাদের এই বিষয়ে স্পষ্ট করে না।
আসলে কি জানেন? দুইশ্রেণির লোকের সংমিশ্রণে পরিপূর্ণ আজকের সমাজটি। এক শ্রেণি মাথা ন্যাড়া করে আরেক শ্রেনি ঐ ন্যাড়া মাথায় তেল দেয়। একজন না বুঝে মাথা ন্যাড়া করে তেলের প্রত্যাশায় আরেকজন তেল দেই চুলের প্রত্যাশায়। প্রথম শ্রেণি হলো এদেশের ছাত্রসমাজ যারা প্রকৃত উদ্দেশ্য না বুঝে মুখস্থ করে আর দ্বিতীয় শ্রেণি হল তারা যারা প্রকৃত শিক্ষা না দিয়ে পুঁথিগত শিক্ষা দেয়। যারা সঞ্চার পথ না দেখিয়ে অমুখ পৃষ্ঠার তমুখ role শিখায়।আসলে এখানে ব্যক্তি বিশেষ দূষ দেওয়াটা বোকামি হবে,,কারণ এটা আমাদের সংস্কৃতি হয়ে গেছে আজকাল।
যাক পরিশেষে একটা কথায় বলব নিজেদের মধ্যে থাকা দামী ফ্রেমের চশমায় একটা দামী লেন্স লাগান,, তারপর শিক্ষার গহিনে গিয়ে তাঁর সুফল উপলব্ধি করুন।
মনে রাখবেন –
যে দুধের কথা শুনেছে
সে বিদ্বান
যে দুধ খেয়েছে সে জ্ঞানী
আর যে দুধ খেয়ে হৃষ্টপুষ্ট হয়েছে সে বিজ্ঞানী।(কোন লেখক একটা জানি বলেছিল)
চয়েস আপনার আপনি কি বিদ্বান হবেন,জ্ঞানী হবেন নাকি বিজ্ঞানী!!
বিদ্বান এজ এ পজিটিভ ডিগ্রি
জ্ঞানী এজ এ কমপারিটিভ
বিজ্ঞানী এজ এ সুপারলেটিভ,
the Choice is yours.
আর হ্যাঁ ছোটবেলায় মা বাবা বলতো বাবা পড়ালেখা কর কারণ –‘পড়ালেখা করে যে গাড়ি ঘোড়া চরে সে,’
আর আমি বলি
পড়ালেখা করে যে বিশ্বটাকে জানে সে।
লেখকঃ
শিক্ষার্থী, দ্বাদশ শ্রেণী, মানবিক শাখা
চট্টগ্রাম সরকারি সিটি কলেজ
Leave a Reply