পলাশ সেনঃ
শনিবার (৪ জুন) রাত সাড়ে ৯ টার দিকে সীতাকুণ্ডের বিএম কনটেইনার ডিপোতে আগুন লাগে।
কেমিক্যাল ভর্তি কনটেইনার থেকে আগুনের সূত্রপাত বলে ধারণা করছেন ফায়ার সার্ভিস।
এখানে রাখা প্রায় ২ শতাধিক কনটেইনারের মধ্যে অনেক কনটেইনারে রাসায়নিক রয়েছে। আগুন লাগার পর রাত বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে আগুনের ভয়াবহতা আরও বাড়তে থাকে। আগুন নেভাতে কাজ করছে ফায়ার সার্ভিসের ২৪টি ইউনিট। ফায়ার সার্ভিসের কুমিল্লা, নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর, ফেনী ও চাঁদপুরের বিভিন্ন স্টেশনের সহযোগিতা চাওয়া হয়েছে। ইতোমধ্যে লক্ষ্মীপুর, ফেনীর দুই ইউনিট যোগ দিয়েছে।তাদের সঙ্গে পুলিশ ও স্থানীয়রাও সহায়তা করছে।
ফায়ার সার্ভিসের পক্ষ থেকে জানানো হয়, আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে আশপাশের কুমিল্লা, নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর, ফেনী ও চাঁদপুরের ফায়ার সার্ভিসের বিভিন্ন স্টেশনের কাছে সহযোগিতা চাওয়া হয়েছে।
ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, এক বিকট শব্দে আগুনের ভয়াবহতা ধ্বংসাত্মক রূপ নেই। এতে চারিদিকে অন্ধকার আচ্ছন্ন হয়ে মুহূর্তের মধ্যে কন্টেইনারে থাকা কেমিক্যালে ডিপোর চারদিকে বাতাসের মধ্যে তেজস্ক্রিয়তা ছড়িয়ে পড়ে। এতে ফায়ার সার্ভিসের কর্মী, পুলিশ এবং ডিপোতে কর্মরত শ্রমিক, উৎসুক জনতা সহ অনেকেই আহত এবং নিহত হয়। ঘটনার শুরুতেই চট্টগ্রাম সিভিল সার্জন মেডিকেলে কর্তব্যরত সকল চিকিৎসকের ছুটি বাতিল করেন। তিনি প্রত্যেক চিকিৎসককে সাদা এপ্রোন পরে চট্টগ্রাম সরকারি মেডিকেল কলেজসহ আশেপাশে বেসরকারি হাসপাতালে যোগদানের জন্য আহ্বান জানান। ঘটনাস্থল সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, চট্টগ্রামের বিভিন্ন মানবাধিকার সংস্থা, রেড ক্রিসেন্ট, গাউছিয়া কমিটির স্বেচ্ছাসেবক বৃন্দ এবং চট্টগ্রামের বিভিন্ন এলাকা থেকে আসা যুবক স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে কাজ করেন। প্রায় ৪শ থেকে ৫শ মানুষ হতাহতের ঘটনায় চট্টগ্রাম মেডিকেলে তীব্র রক্তের সংকট দেখা দেয়। এতে চট্টগ্রামের যুবকরা চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ব্লাড ব্যাংকের সামনে সেচ্চায় রক্তদানের জন্য জড়ো হয় এবং যাদের (ও নেগেটিভ) রক্ত তাদেরকে সামনে এগিয়ে আসার জন্য হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ আহবান করেন। বিভিন্ন মানবাধিকার সংগঠনের পাশাপাশি চট্টগ্রামের ছাত্রলীগ-যুবলীগ এবং অন্যান্য রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীরা রক্ত দেওয়ার জন্য হাসপাতালে জড়ো হয়।
ঘটনাস্থল পরিদর্শনে এসে চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনার আশরাফ উদ্দিন সাংবাদিকদের বলেন, ‘আগুন নিয়ন্ত্রণের জন্য সেনাবাহিনীর ১৫০ থেকে ২০০ সদস্য অভিযানে অংশ নেবেন।’ইতিমধ্যে সেনাবাহিনীর একটি দল ঘটনাস্থলে পৌঁছে কাজ শুরু করেছে।
ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্সের মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার মো. মাইন উদ্দিন বলেন, কন্টেনার বিস্ফোরণের ঘটনায় ফায়ার সার্ভিসের এই পর্যন্ত ৯ জন সদস্য নিহত হয়েছেন। আহত ১৫ জনকে চট্টগ্রাম সিএমএইচে ভর্তি করানো হয়েছে। এদের মধ্যে দুই জনের অবস্থা আশংকাজনক হলে তাদেরকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় পাঠানো হচ্ছে।
সীতাকুণ্ডে কন্টেনার ডিপোতে আগুন লাগার ঘটনায় এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত ফায়ার সার্ভিসের ৯ জন সদস্য সহ নিহতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৪৫ জন এবং আহত হয়েছে প্রায় তিনশতাধিক ।
Leave a Reply