মোঃ মনিরুল ইসলাম রিয়াদ,চট্টগ্রাম মহানগর প্রতিনিধিঃ
স্কুল-কলেজের পোশাক পরিহিত ক্লাসের সময় পার্কে প্রবেশের নিষেধাজ্ঞা থাকলেও কে শুনে কার কথা।
নন্দনকানন ডিসি হিল পার্কগুলোতে বিনোদনের নামে দিন দিন অপকর্ম যেন বেড়েই চলছে। আর এসব অপকর্মে লিপ্ত হচ্ছে উঠতি বয়সী স্কুল-কলেজ পড়ুয়া শিক্ষার্থীরা। স্কুল-কলেজের পোশাকেই বন্ধু-বান্ধবীদের সাথে এসব জায়গায় অন্তরঙ্গ সময় পার করছে তারা।
গত বুধবার নন্দন কানন ডিসি হিল পার্কে সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে, স্কুল-কলেজের পোশাক পরেই বন্ধু-বান্ধবীর হাত ধরে খুব সাধারণ ভাবে ঘুরে বেড়াচ্ছে তারা। সিঁড়িতে জোড়া জোড়া ছেলে মেয়ের অবাধ মেলামেশা। কেউ বা আবার বান্ধবীকে নিয়ে বসে আছে সিঁড়িতে।
পার্কে ঘুরতে আসা নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক শিক্ষার্থী দৈনিক চট্টগ্রাম খবর কে বলেন , সবসময় তো আর ক্লাস হয়না, তাই মাঝে মাঝে বন্ধু-বান্ধবীদের সাথে এখানে এসে আড্ডা দিতে ভালো লাগে। বিভিন্ন রেস্টুরেন্টে বসে তো আর মনের ভাবটা পুরোপুরি প্রকাশ পায় না কিন্তু এখানে উন্মুক্ত স্থানে সবাই মিলে গান গাই, কবিতা পড়ি, আড্ডা দেই।
এ বিষয়ে পার্কের নিরাপত্তা কর্মী মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর এর কাছে জানতে চাইলে তিনি দৈনিক চট্টগ্রাম খবর কে বলেন , এই চিত্র এখানে নতুন কিছু নয়, স্বনামধন্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ছাত্র-ছাত্রীরা প্রতিদিন সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত এখানে আসে। আমরা অনেক শিক্ষার্থীকে আপত্তিকর অবস্থায় দেখি, অনেক অপমান করি কিন্তু কয়জনকে বলব। বেশি কিছু বলতে গেলে অনেক শিক্ষার্থী আমাদের সাথে কথা কাটাকাটি করে এবং দুর্ব্যবহার করে।এখানে তো আর দু-একজন আসেনা। এখানে আসে শত শত মানুষ। আমরা যখন কিছু বলি তখন অন্য জায়গায় সরে যায়। আবার নতুন এক দল আসে। এভাবেই চলছে আসলে কিছু বলার নাই। অনেক সময় অনেক কিছু দেখেও না দেখার ভান করি।
তবে মাঝে মাঝে প্রশাসনের লোক এসে ঘুরে যাই।
পরিবার সহকারে বেড়াতে এসেছেন ইসমাইল নামের এক ব্যক্তি তার কাছে পার্কের পরিবেশ সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এখানে আর পরিবার নিয়ে আসার মত অবস্থা নেই।
আমরা যখন স্কুলে পড়তাম তখন একটা মেয়ের সাথে কথা বলতে সাহস পেতাম না। আর এখন কত সহজে একটা ছেলে একটা মেয়ে আমাদের সামনেই অবাধে হাত ধরে ঘুরে বেড়াচ্ছে। আমরা সবাই দেখছি। কিন্তু কেউ কিছু বলছি না। এটা আসলে আমাদেরই দোষ।
তিনি আরো বলেন, আমাদের ধর্মীও মতে তো এভাবে জোড়ায় জোড়ায় বন্ধু-বান্ধবীদের সাথে বসে সময় কাটানো কোন ভাবেই সম্মতি দেয়না। বিয়ের আগে কোন ছেলে মেয়ে প্রেম, ভালবাসাতো ইসলাম কখনই সমর্থন করে না। প্রেম ভালোবাসাতো দূরের কথা প্রয়োজন ছাড়া কথাও বলা যাবেনা। কিন্তু প্রেম ভালবাসার নামে এসব ছেলে-মেয়েরা এখন নোংরামি করছে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।প্রত্যেক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের উচিত অভিভাবকদের সঙ্গে কথা বলা। পরিবার থেকেই শিক্ষার্থীদের এসব বিষয়ে নৈতিক ও অনৈতিক শিক্ষা দেওয়া দরকার। পরিবার থেকেই সন্তানকে সুসন্তান হিসেবে গড়ে তুলতে হবে।
স্কুল কলেজ চলাকালীন সময়ে ইউনিফর্ম পরিহিত কেন শিক্ষার্থী যেন পার্ক কিংবা বিনোদন কেন্দ্রগুলোতে প্রবেশ করতে না পারে সে বিষয়ে কর্তৃপক্ষকে জোরালোভাবে আইনগত পদক্ষেপ গ্রহণ করার দাবী সচেতন মহলের।
Leave a Reply