পলাশ সেন, চট্টগ্রাম মহানগর প্রতিনিধিঃ
গত ১৪ জানুয়ারি ১৭ জনকে অপহরণ করে মুক্তিপণ আদায়ের তথ্য র্যাব-৮ থেকে সরবরাহ করা হয়। মুক্তিপনের ১০ লক্ষ টাকার দাবীর প্রেক্ষিতে দুস্থ ও নিরীহ জেলেরা তাদেরকে ২ লক্ষ টাকা প্রদান করে। পরবর্তীতে একই ঘটনায় অপহৃত ভিকটিমদের পক্ষ থেকে র্যাব-৭ বরাবর একটি অভিযোগ দায়ের করে।এরই প্রেক্ষিতে র্যাব সদর গোয়েন্দা বিভাগ, র্যাব-৭ ও র্যাব-৮ ভিকটিমদের উদ্ধারের ব্যপক আভিযান পরিচালনা করে। র্যাবের অভিযানের প্রেক্ষিতে জলদস্যূরা র্যাবের অভিযান টের পেয়ে ২ লক্ষ টাকা মুক্তিপণ পেয়ে ভিকটিমদের ছেড়ে দেয়। তারা মূলত কুখ্যাত জলদস্যূ কবীর বাহিনীর প্রধানের কথা বলে মুক্তিপণ দাবি করে।
গত ১৪ জানুয়ারি ২০২২ তারিখ জলদস্যূরা কবীরের নেতৃতে ইউসুফের একটি নৌকা ভাড়া করে যার মধ্যে পেকুয়ার মগনামা ঘাট থেকে ৭ জন কুখ্যাত জলদস্যূ উঠে এবং কুতুবদিয়া থেকে আরো ৮ জন জলদস্যূ নৌকাটিতে উঠে। উক্ত ঘটনায় জলদস্যূর সংখ্যা ছিল মোট ১৫ জন। তারা পুনরায় ডাকাতির প্রস্তুতি নিচ্ছিল।
এরই প্রেক্ষিতে গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে গত ২১ জানুয়ারি ২০২২ খ্রি. তারিখে র্যাব-৭, চট্টগ্রাম এর একটি আভিযানিক চৌকস দল চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার জেলার বিভিন্ন জায়গায় অভিযান চালিয়ে জলদস্যূ ১। নুরুল আফসার, পিতা- পিতা- মোঃ শফিউল আলম, ২। নূরুল কাদের, পিতা- মোঃ শফিউল আলম, ৩। হাসান, পিতা- মোঃ মোতালেব ও ৪। মোঃ মামুন, পিতা-জাকির হোসেন দেরকে গ্রেফতার করা হয়। পরবর্তীতে তাদের দেয়া তথ্য মতে বাকী জলদস্যূদের চকরিয়া থানার ডান্ডিবাজার এলাকার কবীরের আস্তানা থেকে ডাকাতির প্রস্তুতি কালে ২টি বিদেশী পিস্তল, ৬টি ওয়ানশুটার গান, ৪ টি কার্তুজ, ৫টি ক্রিজ, ১টি ছুরি, ১টি রামদা, ২টি হাসুয়া উদ্ধারপূর্বক দেশী-বিদেশী আগ্নেয়াস্ত্রসহ আসামী ১। মোঃ নুরুল কবির (২৯), পিতা-মোঃ হাসেম, ২। মোঃ আব্দুল হামিদ @প্রকাশ @কালা মিয়া (৩০), পিতা-মোঃ লেদু মিয়া, ৩। আবু বক্কর (৩১), পিতা-মৃত জালাল, ৪। মোঃ ইউসুফ (৪৬), পিতা-মৃত জামাল উদ্দিন, ৫। গিয়াস উদ্দিন (৩৭), পিতা-নন্না মিয়া, ৬। মোঃ সফিউল আলমপ্রকাশ মানিক(৩৬), পিতা-মোঃ জাফর আলম, ৭। মোঃ আব্দুল খালেক (৪৪), পিতা-মৃত মাহামুদু, ৭। মোঃ রুবেল উদ্দিন (২৭), পিতা-মৃত মোস্তাক মিয়া, ৯। মোঃ সাইফুল ইসলাম জিকু(২৮), পিতা-মৃত মুজা উদ্দিন, ১০। মোঃ সুলতান (৩৬), পিতা-মৃত আবুল হোসেন, এবং ১১। মোঃ মনজুর আলম, পিতা-মৃত চাম মিয়া দেরকে আটক করে।
উল্লেখ্য যে, গত ১৪ জানুয়ারি ২০২২ ইং তারিখে অপহরণকৃত ১৭ জন জেলের মধ্যে ১৬ জনকে উদ্ধার করা হলেও জেলে আনোয়ার হোসেন, পিতা-আব্দুস সামাদ, সাং- আন্ডারচর, চরকাউনিয়া, নোয়াখালী সদর এখন পর্যন্ত নিখোঁজ রয়েছে। গ্রেফতারকৃত জলদসূদের কাছ থেকে জানা যায় যে, গত ১৬ তারিখ রাতে অপহৃত জেলেদেরকে ব্যপক নির্যাতনের প্রক্কালে জেলে আনোয়ার অসুস্থ হয়ে পরে এবং তাকে নির্মমভাবে মারধর করা হয়। মারধরের এক পর্যায়ে নিরীহ জেলে আনোয়ার হোসেন ব্যাপক অসুস্থতা বোধ করলে তাকে সাগরে নিক্ষেপ করা হয়।
এই জলদস্যূদের প্রায় প্রত্যেকের নামেই অপহরণ ও ডাকাতির একাধিক মামলা রয়েছে।
Leave a Reply