1. news@dainikchattogramerkhabor.com : Admin Admin : Admin Admin
  2. info@dainikchattogramerkhabor.com : admin :
শুক্রবার, ২০ জুন ২০২৫, ১০:১৯ পূর্বাহ্ন
শিরোনামঃ
হযরত শাহ মোহছেন আউলিয়া (রাঃ) এর বার্ষিক ওরশ ৬ই আষাঢ় ২০শে জুন শুক্রবার বোয়ালখালীতে ট্রাকচাপায় প্রবাসীর মর্মান্তিক মৃত্যু চট্টগ্রামের থানা থেকে লুট হওয়া অস্ত্র ও গুলি উদ্ধার আটক ১ কারামুক্ত হলেন মিথ্যা মামলায় অভিযুক্ত যুবদল ও স্বেচ্ছাসেবক  দলের দুই নেতা চন্দনাইশ উপজেলা বিএনপি, যুবদল, ছাত্রদল ও অঙ্গসংগঠনের প্রস্তুতি সভা সহকারী পুলিশ সুপারের সাথে আনোয়ারা প্রেসক্লাব নেতৃবৃন্দের বৈঠক মাদকবিরোধী অভিযানে জোর দেওয়ার আহ্বান বান্দরবান এর গৌরব মানবতার ফেরিওয়ালা ” উম্মে হুমায়রা” পটিয়ায় ইন্দ্রপুল সেতুর নিচ থেকে মাইক্রো চালকের লাশ উদ্ধার চৌগাছায় ঘুষ নেওয়ার অভিযোগে এসআই বরখাস্ত সীতাকুণ্ড পৌরসভার পন্থিছিলা উচ্চ বিদ্যালয়ে জুনিয়র ফুটবল খেলা অনুষ্ঠিত

দেশজুড়ে নিত্য নতুন কৌশলে ভারতীয় অস্ত্র ও গুলির চালান আসছে দেশে।

  • সময় সোমবার, ৬ সেপ্টেম্বর, ২০২১
  • ৩২১ পঠিত

পলাশ সেনঃ

অভিনব কৌশলে আন্তর্জাতিক অপরাধী চক্রের সদস্যরা ভারত থেকে আগ্নেয়াস্ত্র ও গুলির চালান দেশে প্রবেশ করিয়ে পৌঁছে দেওয়া হয় ক্রেতার হাতে।

গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) কর্মকর্তারা বলছেন, এই চক্র পরবর্তীতে মূল্য পরিশোধের শর্তে অস্ত্রগুলো আনছে। যশোরের এক ছাত্রলীগ নেতাসহ চক্রের পাঁচ অভিযুক্ত সদস্যকে গ্রেপ্তারের পর তারা এই তথ্য পেয়েছেন। আর এই কাজে পাচারকারীরা লেনদেনের জন্য অবৈধ হুন্ডি ব্যবহার করেন।

পাচারের কাজটি কীভাবে করা হয় তা ব্যাখ্যা করে কর্মকর্তারা বলেন, বাংলাদেশে থাকা চক্রের সদস্যরা প্রথমে মেসেজিং অ্যাপ হোয়াটসঅ্যাপ ও সিগন্যালে পছন্দের আগ্নেয়াস্ত্রের অর্ডার দেওয়া। যেমন- ৭ পয়েন্ট ৬৫ এমএম কিংবা ৯ এমএম পিস্তল। অর্ডার নেওয়ার পর ভারতের চোরাচালানকারীরা সীমান্ত রক্ষীদের ফাঁকি দিয়ে বাংলাদেশ অংশে অস্ত্র পাঠিয়ে দেয়।
একবার চালানটি বাংলাদেশে ঢুকে পড়লে দুই দেশের নির্দিষ্ট কিছু অবৈধ দোকানের মাধ্যমে অর্থ হাতবদল হয়। বাংলাদেশের চোরাচালানকারীরা টাকায় অর্থ পরিশোধ করলে ভারতের চোরাচালানকারীরা তা রুপিতে গ্রহণ করে। ডিবি কর্মকর্তারা জানান, গ্রেপ্তার হওয়া পাঁচ জনের মধ্যে আকুল হোসেন যশোরের শার্শা উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক। তাদের দাবি, ২০১৪ সাল থেকে এই ছাত্রলীগ নেতা একাই ছিনতাইকারী ও রাজনৈতিক নেতাসহ বিভিন্ন জনের কাছে অন্তত ২০০টি আগ্নেয়াস্ত্র বিক্রি করেছেন।

অস্ত্রের চালান পৌঁছে দিতে ঢাকায় আসার পর বৃহস্পতিবার আকুলসহ চার জনকে গ্রেপ্তার করে ডিবি পুলিশ। এই চার জন হচ্ছেন ইলিয়াস হোসেন, আব্দুল আজিম, ফারুক হোসেন ও ফজলুর রহমান। ডিবি কর্মকর্তারা জানান, তাদের সবাই এখন তিন দিনের রিমান্ডে আছেন। এদিকে গতকাল কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের এক বিবৃতিতে বলা হয়, সংগঠনের শৃঙ্খলা ভঙ্গের দায়ে আকুলকে বহিষ্কার করা হয়েছে।
গোয়েন্দাদের কাছ থেকে প্রাপ্ত তথ্যমতে, আকুল মূলত তিন ধরনের আগ্নেয়াস্ত্র বিক্রি করতেন। এগুলো হচ্ছে- ৯ এমএম, ৫ ইঞ্চি ব্যারেলের ৭ পয়েন্ট ৬৫ এমএম ও ৩ ইঞ্চি ব্যারেলের ৭ পয়েন্ট ৬৫ এমএম পিস্তল। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক গোয়েন্দা পুলিশের এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বলেন, ভারতের চোরাকারবারিরা একটি ৯ এমএম পিস্তলের জন্য ৬১ হাজার রুপি, ৫ ইঞ্চি ব্যারেলের ৭ পয়েন্ট ৬৫ এমএম পিস্তলের জন্য ৫১ হাজার রুপি ও ৩ ইঞ্চি ব্যারেলের ৭ পয়েন্ট ৬৫ এমএম পিস্তলের জন্য ৪১ হাজার রুপি রাখে। আকুল এগুলো বাংলাদেশে যথাক্রমে এক লাখ ২০ হাজার, ৯০ হাজার ও ৮০ হাজার টাকায় বিক্রি করতেন।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আকুল স্বীকার করেছে, ভারতের চোরাচালানকারীরা এই অস্ত্র ও গুলি সেখানকার কারখানায় তৈরি করে। পরে এগুলো কলকাতা হয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করে। ভারতের একজন অস্ত্র চোরাচালানকারী ও আকুলের মধ্যকার কথোপকথনের একটা ভিডিও ক্লিপ ফাঁস হওয়ার পর ওই ভিডিও ক্লিপে আকুলকে ভারতীয় চোরাচালানকারীর কাছে ২০ পিস ৭ পয়েন্ট ৬৫ এমএম পিস্তল চাইতে শোনা যায়। তখন ভারতীয় চোরাচালানকারী জানান, তার কাছে মাত্র ৩ পিস আছে। তবে সেপ্টেম্বরের ৬ তারিখে তিনি পুরো চালানটা দিতে পারবেন। আকুল দাম জানতে চাইলে ভারতের ওই চোরাকারবারি প্রতিটি আগ্নেয়াস্ত্রের দাম চান ৪১ হাজার রুপি। কথোপকথনের সময় আকুল ও ভারতীয় চোরাকারবারিকে কিছু সাংকেতিক শব্দ ব্যবহার করতেও শোনা যায়। যেমন- বুলেটের বদলে খাবার। ৪০০ থেকে ৫০০ বুলেটের একটি চালানের জন্য ভারতীয় চোরাচালানকারী প্রতিটি বুলেটের জন্য ৮০০ রুপি দাবি করেন।
গোয়েন্দা পুলিশের উপ-কমিশনার (গুলশান বিভাগ) মশিউর রহমান জানান, এই অস্ত্র চোরাচালানকারীরা সোনা ও মাদক চোরাচালানের সঙ্গেও জড়িত। তিনি বলেন, আকুল প্রাথমিকভাবে স্বীকার করেছেন যে, ভারতের তিনজন ডিলারের কাছ থেকে তিনি অস্ত্র আনতেন। এক্ষেত্রে অস্ত্র ও গুলি প্লাস্টিকের ব্যাগে মুড়িয়ে সীমান্তবর্তী এলাকাগুলোতে রাখতেন তারা।
ডিবি সূত্র বলছে, সীমান্তে সতর্কতা কিছুটা শিথিল হলে ভারতের চোরাকারবারিরা বাংলাদেশিদের কাছে চালান পাঠায়। এই কাজে অপরাধীরা স্থানীয় দিনমজুরদের কাজে লাগায়। যারা অর্থের একটি অংশ পায়। উপ-কমিশনার মশিউর রহমান বলেন, অস্ত্র ও গুলির মূল্য পরিশোধ করা হয় হুন্ডির মাধ্যমে। বাংলাদেশি চোরাকারবারিরা স্থানীয় কিছু কসমেটিকসের দোকানে টাকায় মূল্য পরিশোধ করে। পরে ভারতীয় চোরাচালানকারীরা ওই অংশের কিছু দোকান থেকে তা রুপিতে গ্রহণ করে। এই ডিবি কর্মকর্তার বক্তব্য, এর মধ্যে আমরা বাংলাদেশি চোরাচালানকারী ও হুন্ডি ব্যবসায়ীদের একটা তালিকা পেয়েছি। আমরা এখন তাদের গতিবিধি বিশ্লেষণ করছি। তাদের সবাইকে গ্রেপ্তারের জন্য অভিযান চালাচ্ছি। এসব অবৈধ অস্ত্রের ক্রেতাদের বিষয়ে জানতে চাইলে মশিউর জানান, তালিকায় অপরাধীদের পাশাপাশি ভূমি দস্যুরাও আছে। অস্ত্র চোরাচালানে জড়িত এই আন্তর্জাতিক চক্রের এক সদস্যের সঙ্গে কথা বলা হলে ওই সদস্য দাবি করেন, কোভিডের জন্য কারখানা বন্ধ হয়ে যাওয়ার কারণে সম্প্রতি অস্ত্রের দাম বেড়ে গেছে।

ডিবির উপ-কমিশনার মশিউর এ ব্যাপারে বলেন, চোরাচালানকারীদের কাছ থেকে আমরা জানতে পেরেছি যে, আগে ভারতে প্রতিটি আগ্নেয়াস্ত্রের মূল্য ছিল ২৮ থেকে ৩০ হাজার রুপির মধ্যে। যেটা তারা বাংলাদেশে ৪৫ থেকে ৫০ হাজারে বিক্রি করত। কিন্তু এখন এই দাম দ্বিগুণ হয়ে গেছে। এই আগ্নেয়াস্ত্রগুলো স্বয়ংক্রিয় এবং এগুলোর ওপর “মেড ইন ইউএসএ” লেখা আছে, বলেও জানান তিনি।
চোরাচালান চক্রের বাংলাদেশি এক সদস্যও বলেন, তারা মূল ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তের কোনো অংশ অরক্ষিত পেলেই অস্ত্রের চালান নিয়ে আসেন। এ ব্যাপারে জানতে চাইলে বর্ডার গার্ড অব বাংলাদেশের (বিজিবি) পরিচালক (অপারেশন) লেফটেন্যান্ট কর্নেল ফয়জুর রহমান বলেন, সীমান্ত কখনোই অরক্ষিত থাকে না। কিন্তু বিজিবির সদস্য সংখ্যা মাত্র ৫৬ হাজার। অথচ বাংলাদেশ-ভারত সীমান্ত বিশ্বের পঞ্চম বৃহত্তম সীমান্ত। এখানে একই সময়ে একটি টহল দলকে আট থেকে নয় কিলোমিটার পর্যন্ত টহল দিতে হয়। এ কারণে সীমান্তে চৌকির সংখ্যা বাড়ানোর পাশাপাশি জনবল বাড়ানোর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে জানিয়ে বিজিবি পরিচালক আরও বলেন, আমরা আমাদের সীমিত সম্পদ দিয়ে সর্বোচ্চ চেষ্টাটা চালিয়ে যাচ্ছি।

খবরটি শেয়ার করুন..

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর..
কপিরাইট © ২০২০ সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
ওয়েবসাইট ডিজাইন: ইয়োলো হোস্ট