1. news@dainikchattogramerkhabor.com : Admin Admin : Admin Admin
  2. info@dainikchattogramerkhabor.com : admin :
শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ০৬:১৯ অপরাহ্ন
শিরোনামঃ
তীব্র তাপদাহে তৃষ্ণার্ত পথচারীদের মাঝে ওয়াহিদুল আলম ওয়াহিদের ঠান্ডা পানি ও খাবার স্যালাইন বিতরণ “তাপদাহের জ্বালা” রচনায়ঃ মোহাম্মদ আব্দুল হাকিম (খাজা হাবীব ) চমেক হাসপাতালের নতুন পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোহাম্মদ তসলিম উদ্দীন চট্টগ্রাম নগরীর সিএমপির ইপিজেড থানা পুলিশের অভিযানে (১০) জন, জুয়াড়ি গ্রেফতার। মোরেলগঞ্জের নিশানবাড়িয়ায় ইউপি সদস্যর জমি গভীর রাতে দখল ফিলিস্তিনকে রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দিলো ১৪২ দেশ, সর্বশেষ জ্যামাইকা পটিয়ার সংসদ সদস্য জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আলহাজ্ব মোতাহেরুল ইসলাম চৌধুরী এমপির জন্মদিন উদযাপন করলেন পটিয়া উপজেলা কৃষকলীগ। বঙ্গবন্ধু মানব কল্যাণ পরিষদ এর চট্টগ্রাম বিভাগের কমিটি ঘোষণা মাদকের ভয়াল থাবায় গ্রাস তরুন প্রজন্ম, সর্বোচ্চ ঝুঁকিতে পথশিশুরা-মোহাম্মদ আলী ইপিজেড থানা কমিউনিটি পুলিশিং এর উদ্যোগে আইন শৃঙ্খলা ও কিশোর গ্যাং প্রতিরোধ বিষয়ক মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত

আমাদের রেমিট্যান্স যোদ্ধারা কেমন আছে? -লায়ন মোঃ আবু ছালেহ্

  • সময় বৃহস্পতিবার, ১৬ মার্চ, ২০২৩
  • ২১২ পঠিত

সম্পাদকীয়ঃ

মঙ্গলবার আরব আমিরাতের দুবাই শহরে একজন রেমিট্যান্স যোদ্ধার জানাজার নামাজ পড়লাম। চট্টগ্রামের ফটিকছড়ি এলাকার বাসিন্দা ৩০ বছর ধরে দুবাই শহরে বসবাস। হঠাৎ স্ট্রোক করে মারা গেলেন। লাশ দেশে নেওয়ার ব্যবস্থা করতে সময় লেগে গেছে এক সপ্তাহ। যখন জানাজা পড়তে যাচ্ছি তখন সবার মুখে একটি কথাই শুনলাম “আল্লাহ যেন বিদেশের মাটিতে কাউকে মৃত্যু না ঘটায়”। অনেক বড় হতাশা থেকে এই কথা মুখ থেকে বের হচ্ছে। বিদেশের মাটিতে মৃত্যুর পর জটিল প্রক্রিয়া দেশে নেওয়ার জন্য। সময় ক্ষেপন ও অর্থ দুটোই প্রতিবন্ধকতা হয়ে দাঁড়ায়। যাক অবশেষে লাশটি দেশে নেওয়ার ব্যবস্থা হয়েছে। আসলে কেমন আছে আমাদের রেমিট্যান্স যোদ্ধারা দূর প্রবাসে? লিখছি তার কিয়দাংশ।
বাংলাদেশের উন্নতি ও অগ্রগতির প্রধান সোপান রেমিট্যান্স। দেশের বাইরে গতর খেটে লাল-সবুজের পতাকা সমৃদ্ধি বৃদ্ধির জোগান দিয়ে আসছেন প্রবাসী শ্রমিকেরা। প্রবাসীদের কষ্টার্জিত রেমিট্যান্সে গড়ে ওঠা স্তম্ভে মজবুত হয়েছে বাংলাদেশের অর্থনীতির ভিত। দেশের বর্তমান জিডিপিতে প্রায় ১২ শতাংশ অবদান রেখে চলা রেমিট্যান্স হয়ে উঠেছে দেশের উন্নয়ন ও মুদ্রার রিজার্ভ স্ফীতির উল্লেখযোগ্য অংশীদার।

ওয়েজ আর্নার্স কল্যাণ বোর্ডের তথ্যমতে, বাংলাদেশ থেকে প্রতিবছর ৬-৭ লাখ মানুষ বিশ্বের বিভিন্ন দেশের শ্রমবাজারে প্রবেশ করেন। এই প্রবাসীরা প্রতিবছর প্রায় ১৮ বিলিয়ন ডলার রেমিট্যান্স পাঠান। বাংলাদেশি হিসাবমতে, ১ লাখ ৫৩ হাজার কোটি টাকা, যা দেশের মোট রপ্তানি আয়ের অর্ধেকের বেশি। এত বিপুলসংখ্যক মানুষ দিন–রাত পরিশ্রম করে শুধু দেশের মুদ্রার রিজার্ভ স্ফীতিতে অবদান ও পরিবারের জন্য অন্ন, বস্ত্র, বাসস্থান, শিক্ষা ও চিকিৎসার ব্যবস্থাই করেননি বরং জীবনযাত্রার মান, কর্মসংস্থান, কাঠামোগত উন্নয়ন, শিক্ষা, চিকিৎসা ও ব্যাংকসহ বিভিন্ন খাতে রেখে আসছেন অভাবনীয় অবদান।

অর্থ মন্ত্রণালয়ের তথ্যমতে, বর্তমানে ১৭৪টি দেশে বাংলাদেশ শ্রমিক প্রেরণ করে আসছে, যা প্রায় ১ কোটি ২০ লাখের বেশি। যাঁদের তিন-চতুর্থাংশ নিয়োজিত রয়েছেন মধ্যপ্রাচ্যে। কেন্দ্রীয় ব্যাংক বলছে, রেমিট্যান্স আয়ের তিন ভাগের দুই ভাগই আসে মধ্যপ্রাচ্য থেকে। করোনার কারণে বিশ্বব্যাপী জালানি তেলের দরপতন, ব্যবসা-বাণিজ্য, পর্যটনশিল্পে ধস ও রাজনৈতিক অস্থিরতাসহ নানা প্রতিকূলতায় সংকটে পড়েছে মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলো। যে কারণে কর্মী ছাঁটাই ও বেতন বন্ধসহ বহুবিধ সমস্যার শিকার হচ্ছেন মধ্যপ্রাচ্যে কর্মরত রেমিট্যান্স–যোদ্ধারা। প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের হিসাবমতে, বিভিন্ন মেয়াদে কারাভোগ, করোনার কারণে কাজ না থাকা, চুক্তির মেয়াদ শেষ হওয়া, প্রতারিত হওয়া ও ভিসার মেয়াদ কিংবা আকামার মেয়াদ না থাকাসহ বিভিন্ন কারণে সৌদি ও আরব আমিরাত থেকে দেশে ফিরেছেন ২ লাখের বেশি প্রবাসী।

অন্যান্য ক্ষেত্রের মতো বৈদেশিক শ্রমবাজারেও যে বেশ বড়সড় ধাক্কা লেগেছে তা সহজেই অনুমেয়। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, জনশক্তি রপ্তানি বন্ধ থাকলে এবং দেশে-বিদেশে প্রবাসীরা আটকে পড়া ও সব পুঁজি নিয়ে দেশে স্থায়ীভাবে ফিরে আসার কারণে একদিকে প্রবাসীদের সামনের দিনগুলো যেমন কঠিন হবে, অন্যদিকে রেমিট্যান্সের ধারাও থাকবে নিম্নমুখী, দেশীয় অর্থনীতিতে যার রেশ খুবই ভয়াবহ হতে পারে। বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় শ্রমবাজার সৌদি আরব। সম্প্রতি আরব আমিরাতের ভিসা পেতে শিক্ষাগত যোগ্যতার সনদ প্রয়োজন হচ্ছে। হঠাৎ করে স্নাতক পাসের সনদই বা কোথায় পাবেন তাঁরা? সব মিলিয়ে বিদেশে যাওয়া নিয়ে বিপাকে পড়ছেন কর্মীরা।

বাংলাদেশের অর্থনীতির প্রাণ রেমিট্যান্স–যোদ্ধারা। দেশের অর্থনীতিকে সজীব ও জাগ্রত রাখতে এবং প্রবাসীদের অবদানের কথা কৃতজ্ঞতাভরে স্মরণ করে সরকারের যুগোপযোগী সিদ্ধান্ত গ্রহণের বিকল্প নেই। এ ক্ষেত্রে প্রথমেই নতুন কর্মী নিয়োগে যেসব প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি হচ্ছে, তা রোধে দ্রুত কার্যকারী পদক্ষেপ নিতে হবে। এটিকে অবহেলা করার কোনো সুযোগ নেই। তা ছাড়া বিভিন্ন দেশ থেকে জোরপূর্বক শ্রমিক ফেরত পাঠানো আটকাতে এবং ফেরত আসা শ্রমিকদের পুনরায় অভিবাসনের জন্য সরকারকে বিভিন্ন দেশের সঙ্গে কূটনৈতিক তৎপরতা বৃদ্ধি করা ছাড়া বিকল্প পথ এখন খোলা নেই। প্রয়োজনে নতুন শ্রমবাজার খোঁজার পাশাপাশি গন্তব্য দেশগুলোর সঙ্গে দর–কষাকষি করে প্রবাসীদের শ্রমবাজার নিশ্চিত করতে হবে।
অবশ্য জনবান্ধব বাংলাদেশ সরকার প্রবাসী শ্রমিকদের কল্যাণার্থে বেশ দৃঢ় উদ্যোগ গ্রহণ করেছেন। দেশে ফিরে যাওয়া প্রবাসীদের ৪ শতাংশ হারে ২০০ কোটি টাকা প্রণোদনা ঋণদানসহ ৫০০ কোটি টাকা ঋণ দেওয়ার পরিকল্পনা গ্রহণ করেছেন আগেই। দেশে ফিরে যাওয়া রেমিট্যান্স–যোদ্ধাদের সরকারি সহায়তার পাশাপাশি বেসরকারিভাবে আর্থিক ঋণ দিয়ে উদ্যোক্তা হিসেবে গড়ে তোলা হলে সে ক্ষেত্রে প্রবাসীদের দুর্দশার মাত্রা কিছুটা লাঘব হতে পারে। রেমিট্যান্স–যোদ্ধাদের দুর্দশা লাঘব ও স্বার্থ সংরক্ষণকে অগ্রাধিকার দিয়ে প্রবাসী কল্যাণ ও উন্নয়ন কার্যক্রম অব্যাহত রাখবেন বলে সরকারের প্রতি প্রত্যাশা।

লেখকঃ

প্রকাশক ও সম্পাদক, দৈনিক চট্টগ্রামের খবর
(আরব আমিরাত হতে)

খবরটি শেয়ার করুন..

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর..
কপিরাইট © ২০২০ সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
ওয়েবসাইট ডিজাইন: ইয়োলো হোস্ট