স্বাধীন বাংলাদেশের সমসাময়িক বিষয় নিয়ে লেখালিখি যে এখন বেশ ঝুকিপূর্ণ তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না। তারপরও দীর্ঘ সময় অপেক্ষার আজ কেনো যেন মনে হলো জাতির এই কান্তি লগ্নে দেশের বর্তমান পেক্ষাপট নিয়ে দুচার কলম না লিখলে বিবেকের কাছে দায় থাকতে হবে মৃত্যুর আগ অবধি। স্বাধীন বাংলাদেশের পঞ্চাশ বছর তথা সূবর্ণ জয়ন্তী বছর ২০২১। আজ থেকে দীর্ঘ ৫০ বছর পূর্বে স্বাধীন একটি রাষ্ট্রের জন্য, একটি মানচিত্র এবং লাল সবুজের একটি পতাকার জন্য পরাধীনতার থেকে জাতি কে মুক্ত করার জন্য পাকিস্তান হানাদার বাহিনীর সাথে দীর্ঘ নয় মাস যুদ্ধ করে মহান মুক্তিযুদ্ধরা জাতি কে একটি স্বাধীন রাষ্ট্র, মানচিত্র, পতাকা উপহার দিয়েছে সেই রাষ্ট্র স্বাধীনতার ৫০ বছরেও ক্ষুধা, দারিদ্র, দূর্ণীতি,অপরাজনীতি মুক্ত মুক্তিযোদ্ধাদের স্বপ্নের সোনার বাংলাদেশ গড়া সম্ভব হয়ে উঠেনি। এখনো শুকনের কবলে পড়ে আছে আজকের বাংলাদেশ।
বাংলাদেশে অপরাজনীতি কারনে সারাদেশে অস্থিরতা আতংকিত। প্রতিদিন গঠিত হচ্ছে সারাদেশে খুন, হামলা,ক্যালেঙ্কারী,সহ নানা অপরাধ। মসজিদ, মন্দির এমনকি নিজ বাড়িতে নেই নিরাপত্তা। রাজনীতির অস্থিরতার কারনে মসজিদ,মন্দিরে হামলা নিত্যদিনের ঘটনা। অপরাজনীতির কারণে দেশের তরুণ সমাজ হচ্ছে মাদকাসক্ত যার কারনে ধ্বংস হচ্ছে পারিবারিক বন্ধন। বেড়ে যাচ্ছে নারী নির্যাতন,ছেলের হাতে পিতা খুন কিংবা আত্নহত্যা হচ্ছে প্রতিদিন। বেশ কিছু দিন আগে চট্টগ্রামে পুলিশের এস আই এর ছেলে নিজ পিতার বন্ধুকের গুলি খেয়ে আত্নহত্যা করেছ।অপরাজনীতি কারনে তনু,আবরার,সাংবাদিক সাগর রুনি সহ অসংখ্য খুনের বিচার সম্পন্ন হয়ে উঠেনি।
আর অন্যদিকে সারাদেশে জ্বালানি তেল, বাস ভাড়া ও দ্রব্যমূল্যের অসহনীয় ঊর্ধ্বগতিতে আতংকে আতংকিত সাধারণ মানুষ। দুর চিন্তায় মধ্যবিত্ত ও নিন্মবিত্ত পরিবার গুলো। গাড়ি ভাড়া বৃদ্ধি, জ্বালানী তেল,চাল, ডাল, ছোলা, চিনি, তেল, পেঁয়াজ, মাছ, গোশতসহ বিভিন্ন ধরনের নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্যের অসহনীয় ঊর্ধ্বগতিতে সাধারণ মানুষ আজ দিশাহারা। নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্যের অস্বাভাবিক ঊর্ধ্বগতিতে সীমিত আয়ের লোক এবং নিম্ন-মধ্যবিত্ত ও দরিদ্র লোকদের নাভিশ্বাস উঠেছে। এভাবে হঠাৎ করে নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির কোনো যৌক্তিক কারন আছে বলে মনে করি না। নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্য জনগণের ক্রয়ক্ষমতার মধ্যে রাখার জন্য সরকারের উচিত কঠোরভাবে বাজার মনিটরিং করা। এ ব্যর্থতার দায়-দায়িত্ব সরকারের।
করোনার কারণে এমনিতেই মানুষের ক্রয় ক্ষমতা কমে গিয়েছে। অনেকেই চাকুরি হারিয়েছে, ব্যবসা-বাণিজ্য বন্ধ হয়ে মানুষের আয়ের পথ সংকুচিত হয়ে পড়েছে। এমতাবস্থায় লাগামহীনভাবে নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতিতে জনসাধারণের নাভিশ্বাস উঠেছে। এ যেন ‘মরার উপর খাঁড়ার ঘা’।
এই করোনা পরিস্থিতিতে সীমিত আয়ের দরিদ্র জনগণ যেন কোন রকমভাবে জীবন বাঁচাতে পারে সেই জন্য নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্য জনগণের ক্রয় ক্ষমতার মধ্যে নিয়ে আসার লক্ষ্যে যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণ করার জন্য সংশ্লিষ্ট মহলের প্রতি আহ্বান।
জ্বালানী তেল,গাড়ি ভাড়া ও দ্রব্যমূল্যে বৃদ্ধির কারনে সারাদেশে সাধারণ মানুষ আতংকিত অবস্থায় জীবন যাপন করে যাচ্ছে। স্বাধীনতার আজ ৫০ বছরে ও ক্ষুধার্ত অবস্থায় মানুষের মৃত্যু হচ্ছে, সরকারী প্রতিটি দপ্তরে দূর্নীতি,লোহার বদলে বাঁশ দিয়ে তৈরি হচ্ছে সড়ক,ওসি প্রদিপের মতো পুলিশ পাচ্ছে রাষ্ট্রের পদক, তাহলে কি মুক্তিযোদ্ধাদের স্বপ্ন সোনার বাংলাদেশ গড়া কি সম্ভব হবে না।
লেখক- তারেক আজিজ চৌধুরী, তরুণ সংগঠক ও সমাজকর্মী
Leave a Reply