চট্টগ্রামে শত বছরের ঐতিহ্যবাহী আব্দুল জব্বারের বলিখেলা ও বৈশাখী মেলা হবে বলে জানিয়েছেন সিটি মেয়র এম রেজাউল করিম চৌধুরী। গত বুধবার চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে বলিখেলা ও মেলা স্থগিতের ঘোষণা দেওয়ার দুইদিন পর (১৫ এপ্রিল) এমন সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছেন মেয়র।
একই কথা বললেন ,বৈশাখী মেলা আয়োজক কমিটির সভাপতি জহুর লাল হাজারীও। তবে এবারের মেলা ও বলি খেলা রাতের বেলায় ফ্লাডলাইটের আলোয় হতে পারে বলে জানান এম রেজাউল করিম চৌধুরী।
তিনি আরো বলেন, ‘প্রতিবারের মতো এবারও চট্টগ্রামে বসবে বৈশাখী মেলা, হবে জব্বারের বলী খেলা। এটা চট্টগ্রামের ঐতিহ্য, তাই বন্ধ করার কোনো কারণ নেই। যেহেতু এবার লালদীঘি মাঠ পাওয়া যাচ্ছে না। তাই মাঠের কাছেই বিকল্প স্থানে বলিখেলার আয়োজনের প্রস্তাব করেছি। তবে মেলা হবে আগের জায়গায়। শুধু চট্টগ্রামে নয়, বাংলাদেশের নানা প্রান্ত থেকে এই খেলায় প্রতিযোগিরা অংশ নিতে আসে।’
স্থগিতের সিদ্ধান্তে চট্টগ্রামের সংস্কৃতি কর্মীসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষের মধ্যে বিরূপ প্রতিক্রিয়া তৈরি হওয়ায় মেলা আয়োজন করা হচ্ছে জানিয়ে মেয়র রেজাউল বলেন, এখন রমজান মাস। দিনের বেলা যানজটের কারণে যদি সমস্যা হয়, রাতের বেলায় ফ্লাডলাইটের আলোয় জব্বারের বলিখেলা হতে পারে।
লালদীঘি মাঠের সামনের পেট্রোল পাম্প চত্বরে বা জেলা পরিষদ চত্বরে অস্থায়ী মঞ্চ করে খেলার আয়োজন করা হবে। আমরা প্রথমে আয়োজক কমিটির সঙ্গে বসে সিদ্ধান্ত নিব। আগামীকাল (শনিবার) সাংবাদিকদের ডেকে তা জানিয়ে দেওয়া হবে।’
আয়োজক কমিটির সভাপতি জহুর লাল হাজারী বলেন, আমরা খেলা শুরুর একদিন আগে মঞ্চ তৈরি করব। আর মেলা হবে ২৪, ২৫, ২৬ (১১, ১২, ১৩ বৈশাখ) এপ্রিল। যানজট ঠেকাতে মাঠে থাকবে সিটি কর্পোরেশনের সুপারভাইজার, স্বেচ্ছাসেবক ও পুলিশ। মেলায় অংশগ্রহণের জন্য সকলকে আহবান জানাচ্ছি।
তিনি আরও জানান, লালদীঘির মাঠের বাইরে মঞ্চ তৈরি করে রাতের বেলা জব্বারের বলিখেলা হবে। মেয়র রেজাউল করিম চৌধুরী চট্টগ্রামের মানুষের মেলা বন্ধে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিরূপ প্রতিক্রিয়া দেখাতে এই উদ্যোগ নিয়েছেন।
প্রসঙ্গত, বাংলা পঞ্জিকা অনুসারে বৈশাখ মাসের ১২ তারিখ লালদীধির ময়দানে হয় এই খেলা। এই খেলা ঘিরে তিন দিন লালদিঘীর মাঠ ও আশপাশের রাস্তায় কয়েক কিলোমিটার এলাকাজুড়ে বসে বৈশাখী মেলা। করোনা মহামারীর কারণে দু্ই বছর আয়োজনটি বন্ধ ছিল।
এবার লালদীঘি মাঠে ছয় দফা মঞ্চ, বিভিন্ন ঐতিহাসিক ঘটনার টেরাকোটা ও মাঠ সংস্কার প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তর। প্রকল্পটি প্রধানমন্ত্রীর উদ্বোধনের কথা রয়েছে। তাই এবার বলিখেলা আয়োজনের জন্য এবার মাঠ পাওয়া যাচ্ছে না।
Leave a Reply