1. news@dainikchattogramerkhabor.com : Admin Admin : Admin Admin
  2. info@dainikchattogramerkhabor.com : admin :
বুধবার, ১৯ মার্চ ২০২৫, ১১:৩৩ পূর্বাহ্ন
শিরোনামঃ
মা মেয়ে কুপিয়ে হত্যা করলো যুবককে! যৌথ বাহিনী কর্তৃক পরিচালিত অভিযান সারা‌দে‌শে গ্রেফতার বাঁশখালী থানা পুলিশের অভিযানে নাশকতার মামলার আসামী গ্রেফতার। আশুলিয়ায় ব্যবসায়ী হত্যায় লুণ্ঠিত স্বর্ণ ও অস্ত্র সহ ছয় জন গ্রেফতার “বদরের যুদ্ধ” -মোহাম্মদ আব্দুল হাকিম (খাজা হাবীব) পুলিশ বাহিনীর সদস্যদের সাথে বাংলাদেশের ইতিহাসে এই প্রথম চলছে বিমাতা সুলভ আচরণ। নাইক্ষ্যংছড়ি সীমান্তে বিজিবির অভিযানে ১১ লক্ষাধিক টাকার পণ্য ও গরু জব্দ  বাইশারীতে হত দরিদ্রদের মাঝে খাদ্য বান্ধব কর্মসূচির চাউল বিতরণ বছরের পর বছর শেষ হয়না কবি নুরুল হুদা সড়কের কাজ। চট্টগ্রাম মহানগরের বিভিন্ন স্থানে নিত্য পণ্যের বাজার তদারকিতে জেলা প্রশাসনের মোবাইল কোর্ট পরিচালনা।

সুখী, সমৃদ্ধ, উন্নত ও স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণের অঙ্গীকার নিয়ে আগামী ২০২৪-২৫ অর্থবছরের সাত লাখ সাতানব্বই হাজার কোটি টাকার প্রস্তাবিত বাজেট।

  • সময় মঙ্গলবার, ১৮ জুন, ২০২৪
  • ১২৯ পঠিত

সুখী, সমৃদ্ধ, উন্নত ও স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণের অঙ্গীকার নিয়ে আগামী ২০২৪-২৫ অর্থবছরের সাত লাখ সাতানব্বই হাজার কোটি টাকার প্রস্তাবিত বাজেট।
গত ৬ জুন মহান জাতীয় সংসদের দ্বাদশ অধিবেশনে আগামী ২০২৪-২৫ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেট উপস্থাপন করেন মাননীয় অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী। এবারের বাজেটের আকার বাড়ছে চার দশমিক ছয় শতাংশ। এটি দেশের ৫৩তম, আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন সরকারের ২৫তম ও অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলীর প্রথম বাজেট।বাজেটে পাঁচ লাখ ৪১ হাজার কোটি টাকা রাজস্ব আয়ের লক্ষ্যমাত্রা থাকছে । বাকি দুই লাখ ৫৬ হাজার কোটি টাকা ঋণ নেওয়ার লক্ষ্যমাত্রা থাকবে। দুই লাখ ৬৫ হাজার কোটি টাকার বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি (এডিপি) ইতোমধ্যে অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। চলতি অর্থবছরে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা সাত শতাংশের বেশি নির্ধারণ করা হয়েছিল এবং আগামী অর্থবছরের লক্ষ্যমাত্রা ছয় দশমিক ৭৫ শতাংশ হতে পারে। প্রস্তাবিত বাজেটে সরকার পাঁচ লাখ ৪১ হাজার কোটি টাকা রাজস্ব সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা নিয়েছে, যা গত অর্থবছরের তুলনায় প্রায় ৪১ হাজার কোটি টাকা বেশি।
চলতি ২০২৩-২৪ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটের আকার ছিল সাত লাখ ৬১ হাজার ৭৮৫ কোটি টাকা। পরে এটি সংশোধন করে সাত লাখ ১৪ হাজার ৪১৮ কোটি টাকা করা হয়। বাজেটে ১৫টি খাতে সাত লাখ ৯৭ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ ধরা হয়েছে। খাতভিত্তিক বরাদ্দ হলো—জনপ্রশাসন খাতে এক লাখ ৭৫ হাজার ৭৭৪ কোটি টাকা, স্থানীয় সরকার ও পল্লী উন্নয়ন খাতে ৪৭ হাজার ৯৫৩ কোটি টাকা, প্রতিরক্ষা খাতে ৪২ হাজার ১৪ কোটি টাকা, জনশৃঙ্খলা ও নিরাপত্তা খাতে ৩৩ হাজার ৫২০ কোটি টাকা, শিক্ষা ও প্রযুক্তি খাতে এক লাখ ১১ হাজার ১৫৭ কোটি টাকা, স্বাস্থ্য খাতে ৪১ হাজার ৪০৮ কোটি টাকা, সামাজিক নিরাপত্তা ও কল্যাণ খাতে ৪৩ হাজার ২০৮ কোটি টাকা, গৃহায়ন খাতে ছয় হাজার ৯২৯ কোটি টাকা, বিনোদন, সংস্কৃতি ও ধর্ম খাতে ছয় হাজার ৭০০ কোটি টাকা, বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতে ৩০ হাজার ৩১৭ কোটি টাকা, কৃষি খাতে ৪৭ হাজার ৩৩২ কোটি টাকা, শিল্প ও অর্থনৈতিক সেবা খাতে পাঁচ হাজার ৬৯৪ কোটি টাকা, পরিবহন ও যোগাযোগ খাতে ব্যয় ৮২ হাজার ৯১৮ কোটি টাকা, সুদ খাতে এক লাখ ১৩ হাজার ৫০০ টাকা এবং অন্যান্য খাতে আট হাজার ৫৭৬ টাকা।
দাম বাড়তে পারে যে সকল পণ্যের: মোবাইলের এসএমএস-কলরেট, সিগারেট, এয়ারকন্ডিশনার ও রেফ্রিজারেটর, কাজু বাদাম, আইসক্রিম, পানির ফিল্টার, এলইডি বাল্ব, গাড়ি কনভার্সন খরচ, ফার্নেস অয়েল, লুব অয়েল, মিনারেল লুব অয়েল ও বেজ অয়েল, ফিলিং স্টেশন স্থাপন, সিএনজি কনভার্সন কিট ও সিলিন্ডার, বিদ্যুৎকেন্দ্রের ইকুইপমেন্ট, ইপিজেডের আমদানিকৃত যন্ত্রপাতি ও নির্মাণ সামগ্রী, কার্বনেটেড বেভারেজ, এমিউজমেন্ট পার্ক, থিম পার্ক ও পর্যটন।
দাম কমতে পারে যে সকল পণ্যের: চাল, ভোজ্যতেল, চিনি, গুঁড়ো দুধ, চকলেট, ল্যাপটপ, মোটরসাইকেল, ডেঙ্গুর চিকিৎসাসামগ্রী, আমদানিকৃত কিডনি ডায়ালাইসিস ফিল্টার ও সার্কিট, ক্যানসার চিকিৎসা সরঞ্জাম, কার্পেট, সুইচ-সকেট, ইলেকট্রিক মোটর, লোহা জাতীয় পণ্য (রড, বার ও এঙ্গেল), উড়োজাহাজের যন্ত্রাংশ ও মিথানল।
আবারও কালো টাকা সাদা করার সুযোগ :-আগামী অর্থবছরে কালো টাকা সাদা করার সুযোগ দিচ্ছে সরকার। কালো টাকা থাকা নাগরিকরা তাদের আয়ের উৎস সম্পর্কে কোনো প্রশ্নের সম্মুখীন না হয়েই তাদের অঘোষিত সম্পদকে বৈধ করার সুযোগ পাচ্ছেন। প্রস্তাবিত বাজেট অনুযায়ী, দেশের প্রচলিত আইন যা-ই থাকুক না কেন, কোনো করদাতা ফ্ল্যাট, জমির পাশাপাশি নগদ অর্থসহ স্থাবর সম্পত্তির জন্য ১৫ শতাংশ কর দিলে কোনো কর্তৃপক্ষ কোনো ধরনের প্রশ্ন তুলতে পারবে না। এ ছাড়া, শেয়ার বাজারে কালো টাকা বিনিয়োগের সুযোগ দেওয়ার প্রস্তাব রাখা হয়েছে বাজেটে। প্রস্তাবনা অনুযায়ী কোনো প্রশ্ন ছাড়াই কালো টাকা শেয়ারবাজারে বিনিয়োগ করা যাবে।

বৃদ্ধি পায়নি করমুক্ত আয়ের সীমা :- করমুক্ত আয়কর সীমা সাড়ে ৩ লাখ টাকা বহাল রাখার প্রস্তাব করেছেন অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী। প্রস্তাবিত বাজেট অনুযায়ী, আয়ের প্রথম সাড়ে ৩ লাখ টাকার ওপর কোনো কর দিতে হবে না। পরবর্তী ১ লাখ টাকার ওপর ৫ শতাংশ, পরবর্তী ৩ লাখ টাকায় ১০ শতাংশ, পরবর্তী ৪ লাখ টাকায় ১৫ শতাংশ, পরবর্তী ৫ লাখ টাকার ওপর ২০ শতাংশ ও বাকি আয়ের ওপর ২৫ শতাংশ আয়কর দিতে হবে।
স্বাস্থ্যে খাতে বরাদ্দ বাড়ছে :- প্রস্তাবিত ২০২৪-২৫ অর্থবছরের বাজেটে স্বাস্থ্য খাতে বরাদ্দ আট দশমিক এক শতাংশ বাড়িয়ে ৪১ হাজার ৪০৭ কোটি টাকা করার কথা বলা হয়েছে। এর আগে ২০২৩-২৪ অর্থবছরে এই বরাদ্দ ছিল ৩৮ হাজার ৫১ কোটি টাকা।
বিদ্যুৎ-জ্বালানি খাতে বরাদ্দ কমল :- প্রস্তাবিত ২০২৪-২৫ অর্থবছরের বাজেটে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের বরাদ্দ প্রায় ১৫ শতাংশ কমিয়েছে সরকার। এবার এই খাতে ৩০ হাজার ৩১৭ কোটি টাকা বরাদ্দ দেওয়ার প্রস্তাব করা হয়েছে, যা গত অর্থবছরে ছিল ৩৪ হাজার ৮১৯ কোটি টাকা।
এমপিদেরকেও গাড়ি আমদানিতে শুল্ক দিতে হবে :- সংসদ সদস্যদের (এমপি) বিদেশ থেকে গাড়ি আমদানিতে সব ধরনের শুল্ক-কর বর্তমানে অব্যাহতি আছে। এ সুবিধা কমিয়ে শুল্ক আরোপের পরিকল্পনা করছে সরকার। তাদের ক্ষেত্রে কর অব্যাহতি সুবিধা কিছুটা কমিয়ে আমদানি শুল্ক ২৫ শতাংশ নির্ধারণ করার প্রস্তাব করা হয়েছে।
বরাদ্দ কমল শিক্ষা খাতে :- আগামী ২০২৪-২৫ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে জিডিপি (মোট দেশজ উৎপাদন) অনুপাতে শিক্ষাখাতে বরাদ্দ চলতি অর্থবছরের তুলনায় কমেছে। প্রস্তাবিত বাজেটে শিক্ষাখাতে মোট বরাদ্দ জিডিপির তুলনায় ১ দশমিক ৬৯ শতাংশের কথা বলা হয়েছে। চলতি ২০২৩-২৪ অর্থবছরে শিক্ষাখাতে মোট বরাদ্দ ছিল জিডিপির ১ দশমিক ৭৬ শতাংশ। এর আগে ২০২২-২৩ অর্থবছরে এই খাতে বরাদ্দ ছিল জিডিপির এক দশমিক ৮৩ শতাংশ এবং ২০২১-২২ অর্থবছরে ছিল দুই দশমিক ০৮ শতাংশ। চলতি অর্থবছরে সরকার শিক্ষাখাতে ৮৮ হাজার ১৬২ কোটি টাকা বরাদ্দ দিয়েছিল। চলতি অর্থবছরের মোট বরাদ্দের তুলনায় আগামী অর্থবছরের বাজেটে শিক্ষাখাতে বরাদ্দ সাত দশমিক ৪২ শতাংশ বাড়িয়ে ৯৪ হাজার ৭১০ কোটি টাকা করার প্রস্তাব করেছে সরকার। যা মোট বাজেটের ১১ দশমিক ৮৮ শতাংশ।
মূল্যস্ফীতি ৬.৫ শতাংশে নামানোর লক্ষ্য :- আগামী অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে মূল্যস্ফীতি ছয় দশমিক পাঁচ শতাংশে নামিয়ে আনার লক্ষ্য নির্ধারণ করেছে সরকার। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) প্রভিশনাল হিসাব বলছে, চলতি অর্থবছরে মূল্যস্ফীতির হার এপ্রিল পর্যন্ত আট দশমিক চার শতাংশ ছিল।

বরাদ্দ কমছে যোগাযোগ খাতে :- প্রস্তাবিত ২০২৪-২৫ অর্থবছরের বাজেটে যোগাযোগ অবকাঠামো খাতে বরাদ্দ গতবারের চেয়ে প্রায় পাঁচ হাজার কোটি টাকা কমেছে। বাজেটে সড়ক, রেল, নৌ ও বিমান পরিবহন উন্নয়নে বরাদ্দ রাখা হয়েছে ৮০ হাজার ৪৯৮ কোটি টাকা। ২০২৩-২৪ অর্থবছরে এ খাতে বরাদ্দ ছিল ৮৫ হাজার ১৯১ কোটি টাকা। সেই হিসাবে এবারের প্রস্তাবিত বাজেটে এই খাতে বরাদ্দ কমলো চার হাজার ৬৯৩ হাজার কোটি টাকা।
ফ্ল্যাট তৈরির সিদ্ধান্ত স্বল্প আয়ের মানুষের জন্য :-
আগামী অর্থবছরে স্বল্প আয়ের মানুষের জন্য চার হাজার ৩২টি আবাসিক ফ্ল্যাট নির্মাণের সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। এসব ফ্ল্যাট নির্মাণের পর স্বল্প আয়ের মানুষের কাছে ভাড়া দেওয়া হবে।
এদিকে, চলতি ২০২৩-২৪ অর্থবছরে সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জন্য চার হাজার ৮৫৬টি আবাসিক ফ্ল্যাট নির্মাণের কাজ চলছে।
বাজেট ঘাটতি :-
আগামী অর্থবছরের সামগ্রিক বাজেটে ঘাটতি ধরা হয়েছে দুই লাখ ৫৬ হাজার কোটি টাকা। বাজেট ঘাটতি মেটাতে বৈদেশিক উৎস থেকে ৯০ হাজার ৭০০ কোটি টাকা এবং অভ্যন্তরীণ উৎস থেকে এক লাখ ৬০ হাজার ৯০০ কোটি টাকা সংগ্রহের প্রস্তাব করেছেন অর্থমন্ত্রী।
ব্যাংক থেকে ঋণ :-
প্রস্তাবিত আগামী অর্থবছরের বাজেটে ঘাটতি মেটাতে ব্যাংক থেকে এক লাখ ৩৭ হাজার ৫০০ কোটি টাকা নেওয়ার পরিকল্পনা সরকারের। ব্যাংকিং খাত ছাড়াও নন-ব্যাংকিং খাত থেকে ২৩ হাজার ৪০০ কোটি টাকা নেওয়ার পরিকল্পনা সরকারের। এর মধ্যে সঞ্চয়পত্র থেকে নেওয়া হবে ১৫ হাজার ৪০০ কোটি টাকা। গত অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটেও সরকার সঞ্চয়পত্র থেকে ১৮ হাজার কোটি টাকা নেওয়ার পরিকল্পনা করেছিল। পরে সংশোধিত বাজেটে দেখা গেছে, উল্টো এই খাতে সাত হাজার ৩১০ কোটি টাকা দিচ্ছে সরকার।
প্রভিডেন্ট ফান্ডে কর বাড়ানোর প্রস্তাব :-
প্রভিডেন্ট, গ্র্যাচুইটি, সুপারঅ্যানুয়েশন ও পেনশন তহবিল থেকে অর্জিত আয়ের ওপর কর হার আগের ২৭ দশমিক পাঁচ শতাংশে ফিরিয়ে নিচ্ছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। বর্তমানে এই করের হার ১৫ শতাংশ।
বৃহস্পতিবার অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী অর্থ বিলে এই প্রস্তাব করেন। বিলটি সংসদে কার্যকর হলে করহার ২৭ দশমিক পাঁচ শতাংশ হবে। অন্যথায় তা বর্তমান ১৫ শতাংশই থাকবে।
ক্যাশলেস শর্তে ৩ বছরের করছাড় আইসিটি খাতে :-
আইসিটি খাতে ক্যাশলেসের শর্তে ১৯ ধরনের ব্যবসায় তিন বছরের জন্য কর ছাড় দেওয়ার প্রস্তাব করেছে সরকার। ব্যবসাগুলো হলো—এআই বেজড সল্যুশন, ব্লকচেইন বেজড সল্যুশন, রোবোটিক্স প্রসেস আউটসোর্সিং, সফটওয়্যার সেবা, সাইবার নিরাপত্তা সেবা, ডিজিটাল ডেটা বিশ্লেষণ ও ডেটা সায়েন্স, মোবাইল অ্যাপ্লিকেশন ডেভেলপমেন্ট, সফটওয়্যার ডেভেলপমেন্ট ও কাস্টমাইজেশন, সফটওয়্যার টেস্ট ল্যাব, ওয়েব লিস্টিং এবং ওয়েবসাইট ডেভেলপমেন্ট, আইটি সহায়তা এবং সফটওয়্যার রক্ষণাবেক্ষণ, জিআইএস, ডিজিটাল অ্যানিমেশন, ডিজিটাল গ্রাফিক্স ডিজাইন, ডিজিটাল ডেটা এন্ট্রি এবং প্রক্রিয়াকরণ, ই-লার্নিং প্ল্যাটফর্ম এবং ই-পাবলিকেশন, আইটি ফ্রিল্যান্সিং, কল সেন্টার এবং ডকুমেন্ট রূপান্তর, ইমেজিং ও ডিজিটাল আর্কাইভিং।
উৎস কর অর্ধেক করার প্রস্তাব নিত্যপণ্যে :-
মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে আগামী অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে নিত্যপণ্যের ওপর উৎস কর কমানোর প্রস্তাব করা হয়েছে। বর্তমানে চাল, গম, আলু, পেঁয়াজ, ভুট্টা, ভোজ্য তেল, লবণ এবং চিনির মতো নিত্যপ্রয়োজনীয় খাদ্যপণ্যের সরবরাহকারীরা ঋণপত্রের ওপর দুই শতাংশ উৎস কর দেন। এ হার আগামী অর্থবছর থেকে এক শতাংশ করার প্রস্তাব করা হয়েছে। এর ফলে ক্রমাগত উচ্চ মূল্যস্ফীতির কারণে ভুগতে থাকা গ্রাহকরা কিছুটা স্বস্তি পেতে পারেন।

রেয়াতি সুবিধা বাড়ানোর সুপারিশ মোবাইলের যন্ত্রাংশ আমদানিতে :মোবাইল ফোনের যন্ত্রাংশ আমদানিতে রেয়াতি সুবিধা আরও ২ বছর বাড়ানোর প্রস্তাব করেছে সরকার।
সরকারি চাকরিজীবীরা সর্বজনীন পেনশন স্কিমের আওতায় আসবেন :- আগামী অর্থবছর থেকে নিয়োগ পাওয়া সরকারি কর্মকর্তাদের অবসর পরবর্তী পেনশন সুবিধার পরিবর্তে সর্বজনীন পেনশন স্কিমে অন্তর্ভুক্ত করা হবে। সর্বজনীন পেনশন স্কিমে অন্তর্ভুক্ত করার সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে স্বায়ত্তশাসিত, রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন এবং অন্যান্য সরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মচারীদের বিক্ষোভের মধ্যে অর্থমন্ত্রী এ ঘোষণা দিলেন।

সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি) এর মতে বাজেটে ৬.৮ শতাংশ প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা অনেকটাই উচ্চাকাঙ্ক্ষী। বাজেট প্রতিক্রিয়া সিপিডির নির্বাহী পরিচালক ড. ফাহমিদা খাতুন বলেন, ‘আমাদের সামষ্টিক অর্থনীতিতে প্রত্যেকটা জায়গায় একটা অস্বস্তি রয়েছে। রাজস্ব আহরণ, ব্যয় ব্যবস্থাপনা, নিম্ন ব্যয় করার সক্ষমতা, ব্যাংক খাত থেকে উচ্চ হারে ঋণ নেওয়া, ব্যাংকিং খাতে দুরাবস্থা, তারল্য সীমিত হয়ে আসা, রপ্তানি নিম্নমুখী, রেমিট্যান্স প্রবাহ বাড়ছে না, ব্যক্তি খাতে বিনিয়োগ স্থবির অবস্থায় রয়েছে, বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ তলানির দিকে যাচ্ছে, বৈদেশিক মুদ্রা বিনিময়ের হার অনেকবার পরিবর্তন করা হয়েছে। অর্থনীতির প্রবৃদ্ধি নিয়ে আমরা অনেক গর্ব করতাম, অনেক প্রবৃদ্ধি হচ্ছে, সেখানেও নিম্নগতি দেখা যাচ্ছে।’
তিনি বলেন, ‘বাজেটে অর্থনীতির মূল সূচকগুলো আগামী অর্থবছরে প্রতিটি চলকে এমন প্রক্ষেপণ করা হয়েছে ২০২৫ সালের জন্য সেগুলোর সঙ্গে বাস্তবতার কোনো সাযুজ্য নেই। ডিজিপি প্রবৃদ্ধি ২০২৫ অর্থবছরে ছয় দশমিক আট হিসাব করা হয়েছে। অথচ চলতি অর্থবছরের শুরুতে লক্ষ্যমাত্রা ছিল সাড়ে সাত শতাংশ, সেটা এখন সংশোধিত ২০২৪ বাজেটে কমিয়ে পাঁচ দশমিক আট শতাংশে আনা হয়েছে।
‘বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থা, যেমন বিশ্বব্যাংক, আইএমএফ তাদের হিসাবে দেখিয়েছে যে, আমরা প্রবৃদ্ধির হার পাঁচ দশমিক ছয় বা পাঁচ দশমিক সাত হবে। সেই পরিপ্রেক্ষিতে ছয় দশমিক আট শতাংশ প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা অনেকটাই উচ্চাকাঙ্ক্ষী,’ বলেন তিনি।
ফাহমিদা বলেন, ‘এই প্রবৃদ্ধি কীভাবে হবে! এটার জন্য বিনিয়োগ লাগবে। বিনিয়োগের ক্ষেত্রেও যে প্রক্ষেপণ করা হয়েছে সেটি অনেকখানি বেশি।’ প্রাক্কলিত বিনিয়োগ আনতে বাড়তি ৩৪৩,৫৪৪ কোটি টাকার বিনিয়োগ লাগবে, এটা তো প্রায় অসম্ভব।’
তিনি আরও বলেন, ‘গত দুই বছর থেকে মূল্যস্ফীতি নয় শতাংশের উপরে। গত মাসেও নয় দশমিক আট শতাংশ ছিল এবং ১০ শতাংশ ছুঁই ছুঁই করে প্রায় সময়ই। আগামী ১২ মাসের মধ্যে এটা কমে যে সাড়ে ছয় শতাংশ হবে কীভাবে সেটা কিন্তু বোধগম্য নয়।’
মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা বলেন- বিশ্ব পরিস্থিতি মাথায় রেখে বাজেট দেওয়া হয়েছে। সরকার বর্তমান বিশ্ব পরিস্থিতি মাথায় রেখে রক্ষণশীল উপায়ে এগিয়ে যাওয়ার মাধ্যমে জনগণের মৌলিক অধিকারগুলো পূরণের লক্ষ্যেই এ বাজেট প্রণয়ন করেছে।
তিনি বলেন, “বিশ পরিস্থিতি মাথায় রেখেই কিন্তু আমাদের পরিকল্পনা নিয়ে চলতে হবে।” আমরা সীমিতভাবে এবং খুব সংরক্ষিতভাবে এগোতে চাই যাতে দেশের মানুষের কষ্টটা না হয় এবং মানুষের যে প্রয়োজন সেটা আমরা মেটাতে চাই। সেদিকে লক্ষ্য রেখেই সেভাবেই আমরা বাজেট করেছি।”

প্রধানমন্ত্রী বলেন, আওয়ামী লীগ প্রমাণ করেছে যে জাতির পিতার হাতে গড়া মাঁটি ও মানুষের এই সংগঠনটি ক্ষমতায় গেলেই মানুষের ভাগ্যের পরিবর্তন হয়, তাদের ভাগ্যের দুয়ার খুলে যায়। বাজেটে মানুষের যেটা প্রয়োজন তার ওপর থেকে সরকার ট্যাক্স কমিয়ে দিয়েছে উল্লেখ করে সরকার প্রধান বলেন, খাদ্য পণ্য, চিকিৎসা ক্ষেত্র, ক্যান্সার বা ডায়ালাইসিস এ সমস্ত জিনিষের ওপর থেকে ট্যাক্স কমিয়ে দিয়ে একদিকে স্বাস্থ্যসেবা, একদিকে কৃষি উৎপাদন, খাদ্য নিরাপত্তা, দেশিয় শিল্পকে প্রাধান্য দেওয়া, দেশিয় শিল্প উৎপাদনের ক্ষুদ্র যন্ত্রাংশ ও কাঁচামাল – সেগুলাকে সীমিতভাবে সুরক্ষা দেওয়া হয়েছে। সেভাবেই অত্যন্ত পরিকল্পিতভাবে আমাদের বাজেটটা আমরা দিয়েছি।
আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, আমাদের আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মী যে যেখানে আছেন প্রত্যেককেই এটা স্মরণ রাখতে হবে যে আওয়ামী লীগের একমাত্র শক্তি হচ্ছে জনগণ। অনেক জায়গা অনেক খেলা খেলতে চেষ্টা করেছে কিন্তু জনগণ আমাদের ওপর আস্থা রেখেছে, বিশ্বাস রেখেছে এবং তাদের ভোটেই আমরা জয়ী হয়ে সরকার গঠন করে আগে একবারসহ একটানা এই চতুর্থবার ক্ষমতায় আছি। যে কারণে বিশে^ আজ বাঙালি জাতি সম্মান নিয়ে চলতে পারে।
তিনি আরো বলেন, “আজকের বাংলাদেশকে উন্নয়নের রোল মডেল বলা হয়। মানুষের এই আস্থা ও বিশ্বাস নিয়েই উন্নয়নশীল দেশ থেকে উন্নত সমৃদ্ধ দেশের পথে এগিয়ে যাবে বাংলাদেশ”।
বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক, সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রী জনাব ওবায়দুল কাদের বলেন- আমাদের সময় বাজেটের আগে ঝুলি নিয়ে কোনো অর্থমন্ত্রী বিদেশে ভিক্ষা চায়নি। ‘১৫ শতাংশ কর দিয়ে অপ্রদর্শিত আয় আমরা অর্থনীতির মূল ধারায় আনার ব্যবস্থা করেছি। এর ফলে ব্যাংকিং সিস্টেমে অর্থপ্রবাহ বাড়বে।’ তিনি আরো বলেন- অর্থনেতিক সংকটকালে এই বাজেট পরিমিত, বাস্তবসম্মত, গণমুখী ও সাহসী উল্লেখ করে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, আমাদের সময় বাজেটের আগে ঝুলি নিয়ে কোনো অর্থমন্ত্রী বিদেশে ভিক্ষা চায়নি।
৮ জুন শনিবার দুপুরে ২৩ বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ে আওয়ামী লীগের কার্যালয়ে প্রস্তাবিত বাজেট নিয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন। জনাব কাদের বলেন, ‘অর্থনেতিক-সামাজিক অগ্রগতির ফলে জীবনমান এ দেশে দিন দিন উন্নততর হচ্ছে। বাংলাদেশ এখন শুধু ডালে ভাতের নয়, পুষ্টি উৎপাদনেও স্বয়ংসম্পূর্ণ।’
তিনি বলেন, ‘এ সময় মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) গড়ে ছয় দশমিক সাত শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। এই অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির সুফল আমাদের সবার মধ্যে পৌঁছে গিয়েছে। ফলে দ্রুততম সময়ের মধ্যে দারিদ্র্য কমেছে।
তিনি আরও বলেন, ‘বাংলাদেশে মূল্যস্ফীতি এখনো নয় শতাংশের উপরে রয়েছে। বৈশ্বিক পরিস্থিতি দেশের বাজারে সরবরাহ শৃঙ্খলে ত্রুটি, ডলার বিপরীতে টাকার মান কমে যাওয়া আমাদের বর্তমান উচ্চ মূল্যস্ফীতির কারণ। একই সময়ে দেশে গড় মজুরি বৃদ্ধি পেয়েছে সাত শতাংশের বেশি এবং মজুরি বৃদ্ধির মধ্যে দুই শতাংশের একটি ফারাক রয়েছে।

‘ইউক্রেন যুদ্ধ শুরু হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে সরকার এবং কেন্দ্রীয় ব্যাংক কম প্রয়োজনীয় পণ্যের আমদানি নিরুৎসাহিত করেছে। এতে আমদানি কমেছে বছরে ১৫ শতাংশের বেশি হারে। ফলে সংকটকালে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ আন্তর্জাতিক মানদণ্ড; তিন মাসের বেশি আমদানির জন্য ধরে রাখা সম্ভব হয়েছে। তা সত্ত্বেও টাকার মান ধরে রাখতে রিজার্ভ থেকে ২২ বিলিয়ন ডলার খরচ করতে হয়েছে। ফলে রিজার্ভ কমে গেছে,’ বলেন তিনি।
জনাব কাদের বলেন, ‘২০০৯ সালে যখন আমরা সরকার গঠন করি, তখনো আমরা ১০ শতাংশ মূল্যস্ফীতির অর্থনীতি পেয়েছিলাম। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকার পরিচালনার দক্ষতার গুণে পূর্ববর্তী দুই বছরের মধ্যে আমরা সেই মূল্যস্ফীতি দমন করে জাতিকে স্থিতিশীল অর্থনীতি উপহার দিয়েছিলাম।
‘বর্তমান সরকারের বিভিন্ন অংশের সমন্বিত পদক্ষেপের মাধ্যমে এবার মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে আনতে আমরা সক্ষম হবো, ইনশাল্লাহ। এই বাজেটে মানুষের মৌলিক অধিকার নিশ্চিত, সামাজিক নিরাপত্তাকে প্রাধান্য দেওয়া হয়েছে। যা দেশের মানুষের জীবনমান উন্নত করবে,’ যোগ করেন তিনি।
কালো টাকা সাদা করার সুযোগ প্রসঙ্গে গণমাধ্যমকর্মীদের প্রশ্নের জবাবে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক আরও বলেন, ‘১৫ বছর আগের বাংলাদেশ ও ১৫ বছরের পরে উন্নয়নে অর্জনে আকাশ-পাতাল পার্থক্য। এই বাজেট এবার গতবারের কিছু বেশি। সেটা আমরা বলেছি কী কারণে। বিএনপি আজকে বড় বড় কথা বলে। অর্থ পাচারের কথা বলে, কালো টাকার কথা বলে, দেশকে গিলে খাওয়ার কথা বলে।
‘তাদের বাজেট সর্বশেষ ছিল ৬৮ হাজার কোটি টাকা। তারপরও বাজেটের আগে সাইফুর রহমানকে বিশ্বের অর্থনীতির বিভিন্ন ফোরামে প্যারিসের কনসোরডিয়াম ফোরামে দৌড়াতে হয়েছিল ভিক্ষার ঝুলি নিয়ে। আমাদের সময় ভিক্ষার ঝুলি নিয়ে বাজেট পূর্ববর্তী সময়ে কোনো অর্থমন্ত্রী বিদেশে গিয়ে ভিক্ষা চায়নি,’ যোগ করেন তিনি।
কাদের বলেন, ‘তাহলে বুঝতে পারে, দেশটা কোথায় থেকে কোথায় এসেছে। ১৫ শতাংশ কর দিয়ে অপ্রদর্শিত আয় আমরা অর্থনীতির মূল ধারায় আনার ব্যবস্থা করেছি। এর ফলে ব্যাংকিং সিস্টেমে অর্থপ্রবাহ বাড়বে।’
বাজেটে কালো টাকা সাদা করার সুযোগ রাখার মাধ্যমে অর্থ উপার্জনের ক্ষেত্রে অন্যায়-অবৈধ কাজে শাস্তি মওকুফের সুযোগ নেই জানিয়ে তিনি বলেন, ‘ফৌজদারি অপরাধে শাস্তির বিধান প্রচলিত আইনেই সম্ভব।’
‘সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি), ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি), সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) কী বললো, সেটা নিয়ে আমাদের কোনো মাথাব্যথা নেই। কথার সঙ্গে যাদের বাস্তব কর্মকাণ্ডে কোনো মিল নেই,’ বলেন তিনি।
সংগৃহীত তথ্যের আলোকে লেখা।
লেখক: যীশু কুমার আচার্য্য, সাংবাদিক ও মানবাধিকার কর্মী

খবরটি শেয়ার করুন..

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর..
কপিরাইট © ২০২০ সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
ওয়েবসাইট ডিজাইন: ইয়োলো হোস্ট